আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ক্যান্সার অপারেশনে বিশ্ব রেকর্ড করেছে রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর সেন্ট পিটার্সবুর্গের একটি ক্যান্সার হাসপাতালের সার্জন দল। এক রোগীর ফুসফুস থেকে ১৭০টি মেটাস্টাসিস অপসারণ করেছেন সার্জনরা।মেটাস্টাসিস হলো ক্যান্সার কোষের পরিপক্ক পর্যায়। দেহের কোনো অংশে ক্যান্সার প্রভাবযুক্ত টিউমার হলে এক পর্যায়ে সেই টিউমার থেকে রক্তের মাধ্যমে সারা দেহে ছড়িয়ে পড়ে পরিপক্ক ক্যান্সার কোষগুলো, আক্রান্ত করে সুস্থ কোষগুলোকে।
মঙ্গলবার মস্কোর অন্যতম ক্যান্সার হাসপাতাল এন. এন. পেত্রোভ ন্যাশনাল মেডিকেল রিসার্চ সেন্টার অব অঙ্কোলজি হাসাতালের ওই চিকিৎকরা ৩৭ বছর বয়সী ওই রোগীর ফুসফুস থেকে ৬টি সার্জারির মাধ্যমে এই মেটাস্টাসিসগুলো অপসারণ করেন। বেশ কয়েক ঘণ্টা ব্যয় হয়েছে এই সার্জারিতে।
সার্জারির পর এক বিবৃতিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, ‘বিশ্বের ক্যান্সার চিকিৎসার ইতিহাসে এর আগে একজন রোগীর দেহ থেকে এত পরিমাণ মেটাস্টাসিস অপসারণ করার ঘটনা ঘটেনি।’এন. এন. পেত্রোভ ন্যাশনাল মেডিকেল রিসার্চ সেন্টার অব অঙ্কোলজি রাশিয়ার সবচেয়ে বড় ও আধুনিক ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোর মধ্যে একটি।
হাসপাতালসূত্রে জানা গেছে ২০২০ সালে হাড়ের বিশেষ ক্যান্সার ওস্টেওসারকোমা শনাক্ত হয় ওই রোগীর দেহে। তারপর মস্কো ও জার্মানিতে বেশ কয়েক দফা কেমোথেরাপি নিয়ে শরীরে ক্যানসারের ছড়িয়ে পড়া প্রাথমিকভাবে আটকে দিতে পেরেছিলেন ওই রোগী, কিন্তু পুরোপুরি বিপদমুক্ত হতে পারছিলেন না। কারণ ক্যান্সারের ছড়িয়ে পড়ার পথ সংকোচনের পাশাপাশি দেহের ভেতর থেকে ক্যান্সার কোসগুলো বের করারও প্রয়োজন ছিল তার।
এজন্য প্রথমে জার্মানিতে সার্জারি করেছিলেন ওই রোগী। কিন্তু ওই সার্জারিতে মাত্র ১০ থেকে ১৫টি মেটাস্টাসিস অপসারণ করেতে পেরেছিলেন জার্মান সার্জনরা।
এন. এন. পেত্রোভ ন্যাশনাল মেডিকেল রিসার্চ সেন্টার অব অঙ্কোলজি হাসপাতালের বক্ষ ক্যান্সার বিভাগের প্রধান ইয়েভগেনি লেভশেঙ্কো রুশ সংবাদমাধ্যম আরটিকে বলেন, ‘টিউমার অপারেশনের তুলনায় মেটাস্টাসিস অনেক বেশি কঠিন ও সময়সাপেক্ষ সার্জারি। এই অপারেশনের ধকল কাটিয়ে উঠতেও রোগীর সময় লাগে। এ কারণে অধিকাংশ চিকিৎসক রোগীর দেহ থেকে ৩০ থেকে ৪০টি মেটাস্টাসিস অপসারণ করেই সার্জারি শেষ করেন।’
‘কিন্তু যে রোগীর অপারেশন আমরা গতকাল (মঙ্গলবার) করেছি, তার বয়স কম ছিলৃ শারীরিক অবস্থা দেখেও আমাদের মনে হয়েছিল যে তিনি সার্জারির ধকল সহ্য করতে পারবেন। এ কারণেই আমরা এই সাহস করেছি।’