লাইফস্টাইল ডেস্ক:
ক্লান্ত শরীরে বিছানায় শুয়েও ঘুমাতে পারছেন না? এই সমস্যা অনেকের কাছেই পরিচিত। বিভিন্ন কারণ ক্লান্তি এবং নিদ্রাহীনতার এই চক্রে অবদান রাখতে পারে। এই সমস্যার কারণ চিহ্নিত করতে পারলে তা আপনাকে কার্যকর সমাধান পেতে সাহায্য করতে পারে। ক্লান্তির পরে ঘুম আসবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ঘুম যদি না আসে তখন সচেতন হতে হবে। জেনে নিন এর কিছু কারণ সম্পর্কে-
১. স্ট্রেস এবং উদ্বেগ
স্ট্রেস হলো একটি প্রধান কারণ যা অনেকের ঘুম নষ্ট করে। যখন জীবন কঠিন হয়ে যায়, তখন আমাদের মন প্রায়ই কাজ, সম্পর্ক বা অর্থ নিয়ে উদ্বেগে ভুগতে থাকে। এটি আরাম করা এবং ঘুমিয়ে পড়া কঠিন করে তোলে। আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের মতে, যারা কম স্ট্রেস লেভেলের রিপোর্ট করেন তারা প্রতি রাতে বেশি স্ট্রেস লেভেলের তুলনায় (৭.১ ঘণ্টা বনাম ৬.২ ঘণ্টা) বেশি ঘুমাতে পারেন। তারা তাদের ঘুমের গুণমানকে চমৎকার বা খুব ভালো (৮% এর তুলনায় ৩৩%) হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
২. ক্যাফেইন এবং নিকোটিন
ক্যাফেইন এবং নিকোটিন হলো সাধারণ উদ্দীপক যা আমাদের ঘুমিয়ে পড়ার ক্ষমতাকে ধ্বংস করতে পারে। বিকেলে বা সন্ধ্যায় কফি, চা বা এনার্জি ড্রিংক খেলে তা দীর্ঘ সময় আপনাকে জাগিয়ে রাখতে পারে। একইভাবে ধূমপান বা ভ্যাপিং থেকে নিকোটিন ঘুমের ধরনকে ব্যাহত করতে পারে এবং আপনাকে জাগ্রত রাখতে পারে। ২০২৩ সালের এক সমীক্ষা অনুসারে, ক্যাফেইন গ্রহণ মোট ঘুমের সময়কাল ৪৫ মিনিট কমিয়ে দেয় এবং ঘুমের কার্যকারিতা ৭% কমিয়ে দেয়। এটি ঘুমিয়ে পড়ার সময়কে ৯ মিনিট বাড়িয়েছে এবং প্রাথমিকভাবে ঘুমিয়ে পড়ার পরে জেগে ওঠার সময় ১২ মিনিট বাড়িয়েছে।
৩. ঘুমের সময় ঠিক না থাকা
আমাদের শরীর সামঞ্জস্যপূর্ণ রুটিনের সঙ্গে সবচেয়ে ভালো কাজ করে এবং অনিয়মিত ঘুমের রুটিন স্বাভাবিক ঘুম-জাগরণ চক্রকে ব্যাহত করতে পারে। নিয়মিতভাবে আপনার ঘুমের ধরন পরিবর্তন করা, যেমন সপ্তাহান্তে রাত জেগে থাকা বা বিভিন্ন শিফটে কাজ করা শরীরের জন্য নিয়মিত ঘুমের ধরন তৈরি করা কঠিন করে তুলতে পারে।
৪. অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম
আজকের ডিজিটাল যুগে আমাদের মধ্যে অনেকেই স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে অনেকটা সময় পার করে দিই। বিশেষ করে বিশ্রামের সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রোল করা বা শো দেখার মাধ্যমে। ফোন, ট্যাবলেট এবং কম্পিউটার দ্বারা নির্গত নীল আলো মেলাটোনিন উৎপাদনে হস্তক্ষেপ করতে পারে। এটি একটি হরমোন যা ঘুম নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। স্লিপ মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে কিশোর-কিশোরীরা যারা স্ক্রিনে অনেক সময় কাটিয়েছে তাদের ঘুমের পরিমাণ কমে গেছে এবং যারা কম সময় স্ক্রিনে কাটায় তাদের তুলনায় ঘুমাতে দেরি হয়েছে।
৫. শারীরিক অস্বস্তি
শারীরিক অস্বস্তি, শক্ত বিছানা শব্দ, বা তাপমাত্রার ওঠানামা ইত্যাদি আপনার ঘুমের গুণমানকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা বা হজমের সমস্যাও আরামদায়ক ঘুমের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই ঘুমের সময় নিজের বিছানা যেন আরামদায়ক ও পরিচ্ছন্ন হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। নিজের যতœ নিন, সুস্থ থাকুন।