গরুর মাংসে লাভ কম হলেও বিক্রি বেশি করতেন ব্যবসায়ী খলিল

হত্যার হুমকিদাতাসহ দু’জন র‌্যাবের কব্জায়

প্রকাশিত: ৯:০৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৮, ২০২৪

সাইফুল ইসলাম:

লাভ কম হলেও বিক্রি বেশি করতেন গরুর মাংস ব্যবসায়ী খলিল। সবমিলিয়ে তার আয়ও ভালো। সারাদিনে মাংস বিক্রি করে যা আয় হত অন্যান্যদের তুলনায় তার লাভ আর ক্রেতার পাল্লা বেশিই ছিল। এ জন্যই কম দামে মাংস বিক্রি না করতে মোবাইল ছবি পাঠিয়ে, ফোন করে মোটা অংকের চাঁদা চেয়ে হুমকি দেয় প্রতিপক্ষরা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী থানায় জিডি করলে ছায়া তদন্তে নামে র‌্যাব। সেই র‌্যাবের কব্জায় ধরা পড়েছে গরুর মাংস ব্যবসায়ী খলিলকে হত্যার হুমকিদাতা ও নির্দেশদাতা। এরা হলেন- নুরুল হক (৬৭) ও মোহাম্মদ ইমন (২২)। আজ রোববার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
সংবাদ সম্মেলনে কম দামে গরুর মাংস বিক্রির রহস্য ফাঁস করেছেন আলোচিত গরুর মাংস ব্যবসায়ী খলিল। কম দামে গরুর মাংস বিক্রির কারণ হিসেবে খলিল সাংবাদিকদের বলেন, ৫৯০ টাকা কেজি গোস্ত বিক্রি করেছি ২ মাস। আর ৬৫০ টাকা বিক্রি করতেছি ১০ থেকে ১২ দিন ধরে। আমার সেলটা (বিক্রি) একটু বেশি।
তিনি বলেন, টাটকা-টাটকা সেলের কারণে আমার একটু পোষায়। অন্যদের তুলনায় আমার বিক্রি হয় অনেক বেশি, এজন্য আমার পোষায়। কম দামে মাংস বিক্রি করলে, কম প্রোফিটে (লাভে) সেল (বিক্রি) বেড়ে যাওয়ায় আমার পোষায়। আর ক্রেতা বেশি হওয়ার কারণে, আমি কম দামে মাংস সেল করি। অন্য দোকান থেকে ৭৫০ টাকা দিয়ে মাংস কিনে আমরা ঠকছি কিনা সাংবাদিকদেরে এমন প্রশ্নের জবাবে খলিল বলেন, না-আপনারা ঠকছেন না। তাদের বিক্রি কম হয়। ঢাকায় সবচেয়ে বেশি মাংস আমি বিক্রি করি। এজন্য আমার পোষায়।
এর আগে গত ১৮ জানুয়ারি রাজধানীতে কম দামে গরুর মাংস বিক্রির কারণে ব্যবসায়ী খলিল ও তার ছেলেকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। এ ঘটনায় গত ২০ জানুয়ারি রাজধানীর শাহজাহানপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তিনি। পরে গতকাল শনিবার (২৭ জানুয়ারি) রাতে ঢাকার আশুলিয়া থেকে হত্যার হুমকিদাতা ও নির্দেশদাতাকে আটক করে র‍্যাব। আটকরা হলেন- নুরুল হক (৬৭) ও মোহাম্মদ ইমন (২২)।
সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ১৮ জানুয়ারি আলোচিত মাংস ব্যবসায়ী খলিলুর রহমানের মোবাইলে একটি নম্বর থেকে কল করে ২৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি এবং কম দামে মাংস বিক্রি করলে তাকে ও তার ছেলেকে দুই দিনের মধ্যে গুলি করে হত্যার হুমকিসহ অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করা হয়। এছাড়া খলিল এবং তার ছেলেকে হত্যার জন্য গুলি ও পিস্তল রেডি করা হয়েছে জানিয়ে তার মোবাইল ফোনে পিস্তল, গুলি, রামদা এবং মাথা ছাড়া লাশের ছবি পাঠিয়ে ভয়ভীতি দেখানো হয়। এরপর মাংস ব্যবসায়ী খলিল গত ২০ জানুয়ারি রাজধানীর শাহাজাহানপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং-৮১৩) করেন। এ ঘটনায় গোয়েন্দা নজরদারির ধারাবাহিকতায় প্রযুক্তির সহায়তায় গতকাল শনিবার (২৭ জানুয়ারি) রাতে আশুলিয়া থেকে খলিলকে হুমকি দেয়া এবং এর নির্দেশদাতাকে আটক করা হয়।