গাংনী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার লাঞ্ছিত, থানায় মামলা

প্রকাশিত: ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ৫, ২০২৪

মেহেরপুর প্রতিনিধি:

মেহেরপুরে গাংনীতে আদালতে একটি নারী নির্যাতন মামলার তদন্ত চলাকালে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে মোবারক লাঞ্ছিত হয়েছেন। গতকাল সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই থানায় মামলা করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী হোসনে মোবারক নিজে বাদী হয়ে গাংনী থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় এজাহার নামীয় ৮ জন এবং অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বানী ইসরাইল।

মামলার এজাহারে জানা গেছে, মেহেরপুর আদালতের বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের ২০৮/২০২৪ নম্বর পিটিশন মামলা তদন্তের শুনানির জন্য উভয়পক্ষকে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে ডাকা হয়। সোমবার দুপুরে বাদী-বিবাদী অফিসের সামনে হাজির হলে উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও বাক বিতণ্ডা শুরু হয়। এ সময় তিনি উভয়পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান।

এক পর্যায়ে ১০/১২ জন যুবক রাগান্বিত হয়ে তার হাতে থাকা মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেয় ও শার্টের কলার ধরে টানাহেঁচড়া করে লাঞ্ছিত করে। এর প্রতিবাদ জানালে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের সহকারী তোফাজ্জেল হোসেনকেও লাঞ্ছিত করে এবং অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে এবং দেখে নেয়ার হুমকি দেয় তারা। ঘটনাটি তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করেন শিক্ষা অফিসার হোসনে মোবারক। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায়। ততক্ষণে যুবকেরা সটকে পড়ে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

গাংনী থানার ওসি বানী ইসরাইল বলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসার লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে একটি নিয়মিত মামলা হয়েছে। অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ মাঠে রয়েছে।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে জেলা প্রশাসককে বিষয়টি অবহিত করি। পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলেছে জেলা প্রশাসক।

উল্লেখ্য, গাংনী উপজেলার হাড়িয়াদহ গ্রামের সােহরাব আলীর মেয়ে সীমা খাতুনের সাথে একই উপজলার ঝােরপাড়া গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে তুহিন আলীর প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে ১ বছর আগে নিকাহ রেজিস্টারের কার্যালয়ে বিয়ে হয়। পরে পারিবারিকভাবে ভুল বুঝাবুঝি হলে ছেলে তুহিন আলী বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে। স্ত্রী সীমার সঙ্গে যােগাযােগ বন্ধ করে দেয়। এ নিয়ে সীমা খাতুন আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে ইতােপূর্বে গাংনী উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। মামলা নিষ্পত্তি করতে তিনি স্বামী তুহিনের ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। কিন্তু স্ত্রী বাদী সীমা খাতুন নারাজি দিয়ে আদালত অবমাননা করে চলে যায়। পরে ওই মামলা পুনরায় প্রতিবেদন করে নিষ্পত্তি করতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। সেই আলােকে তিনি উভয়পক্ষের শুনানি করছিলেন।