গাজীপুরে ছয় কারখানা বন্ধ, দুটিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ২:২১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৯, ২০২৪

গাজীপুর প্রতিনিধি:

হাজিরা বোনাস ও বেতন বাড়ানোসহ বেশ কিছু দাবিতে বিক্ষোভ করছেন দুটি কারখানার শ্রমিকরা। বুধবার (৯ অক্টোবর) সকাল ৮টা থেকে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি এলাকায় যমুনা গ্রুপের একটি কারখানা ও কালিয়াকৈরের তেলিচালা এলাকার পূর্বাণী গ্রুপের একটি কারখানায় বিক্ষোভ করছেন।

এসময় যমুনা ডেনিম গার্মেন্টস অ্যান্ড ওয়াশিংয়ের শ্রমিকরা কোনাবাড়ি-কাশিমপুর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করেন। তবে পূর্বানী কারখানার শ্রমিকরা তাদের কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। এদিকে আজও ছয়টি কারখানা বন্ধ রয়েছে।
পুলিশ ও কারখানার শ্রমিকরা জানান, কোনাবাড়ি এলাকায় একই কম্পাউন্ডের ভেতরে থাকা যমুনা গ্রুপের যমুনা ডেনিম গার্মেন্টস অ্যান্ড ওয়াশিং কারখানার শ্রমিকরা সকাল ৮টায় হাজিরা দিয়ে কাজে যোগ দেন। কিছু সময় পর কাজ বন্ধ করে তারা কারখানার সামনে অবস্থান করে বেতন বাড়ানোসহ বেশ কিছু দাবি নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।

এসময়ে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে কোনাবাড়ি-কাশিমপুর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করেন। এতে ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।
খবর পেয়ে কোনাবাড়ি থানা পুলিশ ও গাজীপুর শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বোঝানোর চেষ্টা করে। পরে দুপুর ১২টার দিকে সড়ক থেকে শ্রমিকদের সরিয়ে দেওয়া হলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দুপুর ১টার দিকে কারখানার সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকরা।

কারখানার শ্রমিক মো. আব্দুল কাদের বলেন, আমাদের আশপাশের সব কারখানায় শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাড়ানো হলেও আমাদের বেতন বাড়ানো হয়নি। হাজিরা বোনাস বাড়ানো হয়নি। এমনকি বাৎসরিক বেতন বাড়ানো হচ্ছে না।

অপর শ্রমিক হাফিজ মিয়া বলেন, আমাদের দাবি মেনে না নিলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
কোনাবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বেশ কিছু দাবি-দাওয়া নিয়ে যমুনা গ্রুপের শ্রমিকরা সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন। কোনাবাড়ি-কাশিমপুর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করলে তাদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়।

অপরদিকে কালিয়াকৈরের তেলিচালা এলাকায় পূর্বানি গ্রুপের করিম টেক্সটাইলের শ্রমিকরা হাজিরা বোনাস, টিফিন বিল, বাৎসরিক বেতন বাড়ানোসহ প্রায় ২৬-২৭টি দাবি নিয়ে মঙ্গলবার থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন। দাবির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় বুধবার সকাল থেকে ফের কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা।

এসময় তারা ঢাকা-টাঙ্গাল মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে আগে থেকেই ঘটনাস্থলে থাকা শিল্প পুলিশ তাদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেয়। তবে তারা কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী এসে মালিক পক্ষের সঙ্গে বসে তাদের দাবির বিষয়গুলো সমাধান করার চেষ্টা করছে।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম বলেন, পূর্বানী গ্রুপের শ্রমিকরা গত দুদিন ধরে বিক্ষোভ করছেন। সকালে আবারো তারা বিক্ষোভ করলে সেনাবাহিনী ও শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করছে।

গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, কালিয়াকৈর উপজেলার পূর্বানী কারখানায় শ্রমিকদের নিয়ে আলোচনা চলছে সমস্যা সমাধানের জন্য। মালিকপক্ষ আন্তরিক আছেন আশা করি সমাধান হয়ে যাবে। যমুনা গ্রুপের শ্রমিকরা এখনো বিক্ষোভ করছেন। কীভাবে সমাধান করা যায় সে বিষয়টি দেখা যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন কারণে গাজীপুরের নয়টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরমধ্যে তিনটি কারখানা চালু হয়ে গেছে। তবে আজও ছয়টি কারখানা বন্ধ রয়েছে।