গালফ এয়ারের পাইলট ইউসুফের মৃত্যুতে দায়ীদের খুঁজতে মায়ের রিট

প্রকাশিত: ৭:৪৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:
গালফ এয়ারের পাইলট ক্যাপ্টেন ইউসুফ হাসান আল হিন্দির মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত ও বিমান সংস্থাটির অবহেলার দায়ে জড়িতদের বের করে ব্যবস্থা নিতে সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশের (সিএএবি) প্রতি নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন করা হয়েছে। আজ সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় গালফ এয়ারের ক্যাপ্টেন ইউসুফ হাসান আল হিন্দির মা সামিহার পক্ষে তাদের আইনজীবী শাকিব মাহবুব এ রিট করেন।
রিটে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান, গালফ এয়ারের কান্ট্রি ম্যানেজার ইসা শাহ ও কো-পাইলট খালিল আবদুল রাজাককে বিবাদী করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সামিহার আইনজীবী ব্যারিস্টার সাকিব মাহবুব নিউজ পোস্টকে বলেন, আজ যে রিট আবেদনটি দায়ের হয়েছে তার মূল বিষয় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের গালফ এয়ারকে তদন্ত করার ব্যাপারে অবহেলা এবং অস্বীকৃতির কারণে।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ আইন অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ থেকে যেসব এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা রাখে। কিন্তু হাইকোর্টে পূর্বে পাইলটের বোনের রিট পিটিশনে হাইকোর্টের আদেশ থাকা সত্তে¡ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ গালফ এয়ারের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের তদন্ত করতে অস্বীকৃতি জানায়। এর যুক্তি হিসেবে তারা বলে, কোনো বিদেশি এয়ারলাইন্সের বিরুদ্ধে তাদের তদন্ত করার কোনো এখতিয়ার নেই। কেউ যদি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্র্তৃপক্ষ আইন, ২০১৭ দেখেন, সেখান থেকে স্পষ্ট ভাবে প্রতীয়মান হবে যে বাংলাদেশে যদি কোনো ঘটনা ঘটে সেক্ষেত্রে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার তাদের রয়েছে।


তার মা গালফ এয়ারের কর্মকর্তা ও ঢাকার ইউনাইটে হাসপাতালকে এ মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছেন। গালফ এয়ারের ক্যাপ্টেন ইউসুফ হাসান আল হিন্দি ২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর ইউনাইটেড হাসপাতালের চিকিৎসাধীন অবস্থায মারা যান। এ সময় তার তিন বার হার্ট অ্যাটক হয়। অন্যদিকে আল হিন্দিকে যখন ফ্লাইটের দায়িত্ব দেওয়া হয় গালফ এয়ার ফেডারেল এভিয়েশন অথরিটির দেওয়া গাইডলাইন অনুসরণ করেনি। মৃত পাইলটের হার্টে ৯৯ শতাংশ বøকেজ ছিল।
মৃত পাইলটের মা সামিহা বলেন, বাহরাইন ও গালফ এয়ার বাংলাদেশের ব্যবস্থার অপব্যবহার করে এবং ন্যায়বিচারকে বাধাগ্রস্ত করে আমার ছেলের মৃত্যুতে তাদের সম্পৃক্ততা মুছে ফেলার আপ্রাণ চেষ্টা করছে। আমার ছেলে গালফ এয়ারে ২৫ বছর ধরে কাজ করেছে। কেন গালফ এয়ার ইউনাইটেড হাসপাতালের ডাক্তারদের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারলো না?
পাইলটের মা সামিহা আরও বলেন, গালফ এয়ার এবং মুসলিম দেশ বাহরাইন আমার ছেলের কাছ থেকে আমার ইসলামিক উত্তরাধিকারকে জিম্মি করে তাদের ও চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে আমাদের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া বিরত রাখতে বলপ্রয়োগ করছে।
আমার ছেলের যদি আধাঘণ্টা পরে হার্ট অ্যাটাক হয়ে যেত তবে এটি একটি ভিন্ন গল্প এবং ট্র্যাজেডি হতো। কিন্তু উড়োজাহাজটি ওড়ার সময় তিনি মারা যাননি। অনেক নিরীহ জীবন রক্ষা পেয়েছিল বলে জানান তিনি।
তার মা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে তার ছেলের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়ার আহŸান জানান। আশা করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার কোনো বৈষম্যমূলক আচরণ করবে না এবং ন্যায়বিচার লুকানোর জন্য গালফ এয়ার এবং ডাক্তারদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র না করার জন্য আহŸান জানাচ্ছি। যখন তারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছিল, আমার ছেলে বাংলাদেশিদের সেবা করছিলেন; সে আপনাদের অতিথি ছিল।