নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর অভিজাত গুলশান-১ নম্বরে গুলশান শপিং সেন্টার সিলগালা করার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ব্যবসায়ীরা। সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে সড়ক অবরোধের পর পুলিশ ব্যবসায়ীদের সরাতে গেলে বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এসময় বিক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাংচুর করেছে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে ওই সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গুলশান-১ নম্বরে গুলশান শপিং সেন্টারটি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হওয়ায় তা সিলগালা করার উদ্যোগ নেয় ডিএনসিসি। সেই অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) দুপুর আনুমানিক ১২টার দিকে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ওই ভবনটি সিলগালা করে দেয় ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে ডিএনসিসি’র কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সঙ্গে উত্তপ্ত বাগবিতণ্ডা হয়। ঘটনার একপর্যায়ে ব্যবসায়ীরা সড়কে অবস্থান নিয়ে এ ঘটনার প্রতিবাদে অবরোধ-বিক্ষোভ শুরু করে। এতে প্রধান সড়কসহ আশপাশের সড়কগুলোতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘন্টা পর্যন্ত চলে এ বিক্ষোভ। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিকেল পৌনে ৪টার দিকে পুলিশ এসে ব্যবসায়ীদের সড়ক ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানালে উত্তেজনা আরও ছড়িয়ে পড়ে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ব্যবসায়ীদের সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এসময় বিক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা বেশ কয়েকটি প্রাইভেটকার ও বাস ভাংচুর চালায়। এরপর বিকেল ৪টার দিকে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে ব্যবসায়ীদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে প্রায় ৫টার দিকে ওই সড়কে সব ধরণের যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে।
বিক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা জানান, ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ তাদের কোনো সময় না দিয়েই উচ্ছেদ করা হয়। এতে তারা ব্যাপকভাবে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
এদিকে গুলশান জোনের সরকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আব্দুল্লাহ আল মাসুম নিউজ পোস্ট বিডিকে বলেন, প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা অবরোধের পর ব্যবসায়ীদের সড়ক থেকে সরে যাওয়ার কথা বললে তারা পুলিশের ওপর চড়াও হন। একপর্যায়ে পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকেন। এরপর তাদের ধাওয়া দিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হলে যানবাহন চলাচল শুরু হয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় গুলশান থানার পরিদর্শক (অপারেশনস) আমিনুল ইসলামসহ পুলিশের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর আগে দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হওয়ায় মার্কেটটি সিলগালা করেন। এসময় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের বাগবিতণ্ডা হয়। ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ বলছে, এাঁ তাদের রুটিন ওয়ার্ক। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আগেই তা ভেঙে ফেলা বা সংস্কার করার কথা ব্যবসায়ীদের জানানো হয়। কিন্তু ব্যবসায়ীরা ডিএনসিসির নির্দেশনা উপেক্ষা করেই ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। তাই আজ সেই মার্কেটটি সিলগালা করা হয়েছে।