বিনোদন ডেস্ক:
দুই দশকের বেশি সময় ধরে গানের ভুবনে পদচারণা। স্বনামেই পরিচিত। তারপরও শিল্পীজীবনের প্রতিটি অধ্যায় রচনা করছেন ব্যান্ড চিরকুটকে সঙ্গী করে। বলছি, কণ্ঠশিল্পী, গীতিকবি ও সুরকার শারমিন সুলতানা সুমির কথা। চিরকুটের এই কান্ডারি কখনোই ব্যান্ডের বাইরে নিজের পরিচয় আলাদা করে তুলে ধরতে চান না।
তাঁর কথায়, ‘সংগীত জীবনের যা কিছু প্রাপ্তি, তা এককভাবে নয়; বরং চিরকুটের সদস্য হওয়ার সুবাদে পাওয়া।’ তাঁর এই কথা থেকে স্পষ্ট যে, চিরকুট তাঁর সংগীত সাধনার প্রধান বাহন। যাকে সঙ্গী করে পেরিয়ে এসেছেন দুই দশকের পথ। যেতে চান আরও বহুদূর। তাই প্রতিটি অর্জনের পেছনে চিরকুট প্রতিটি সদস্যের অবদানকে সামনে তুলে আনেন সুমি। সম্প্রতি বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে ‘চিরকুটের ‘জাদুর শহর’ গান নিয়ে একটি ভিডিও তৈরি করে শেয়ার করা হয়েছে; যা দেশীয় সংগীতকে যেমন গর্বিত করেছেন, তেমনি চিরকুটকে নতুন করে নিয়ে এসেছেন আলোচনায়। তারপরও সুমি কিংবা তাঁর ব্যান্ডের অন্য সদস্যদের এ নিয়ে এতটুকু অহম প্রকাশ করাতে দেখা যায়নি; বরং বিষয়টি নিয়ে নিজেদের ভালো লাগার কথাই তুলে ধরছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বল্প কথায় সুমি জানিয়েছেন, ‘ছোটবেলা থেকে ফুটবল, ক্রিকেট ভালোবাসি। সারা পৃথিবীতে ফিফা ফুটবলের ব্যাপারটা দেখে। ফিফা’র অফিসিয়াল পেইজে একটা কাস্টমাইজড রিলে বাংলাদেশের একটা বাংলা গানের কিছু অংশ ব্যবহার করছে। গানটা আপনাদের অনেকের পছন্দের, আমাদের ব্যান্ডের ‘জাদুর শহর’। ভালো লাগছে।’ আসলে সুমি এমনই, আয়োজন যত বড় পরিসরের কিংবা বর্ণাঢ্য হোক, সৃষ্টি যত অনবদ্যই হোক– তার বিচারের ভার শ্রোতার হাতেই ছেড়ে দেন। শ্রেষ্ঠত্বের দাবি করেন না, যখন না দর্শক-শ্রোতা নিজেদের মত প্রকাশ করছেন। এমন নয় যে, দুই দশকের সফরে চিরকুট বিশেষ কিছু অর্জন করেনি। করেছে এবং সংগীতপ্রেমীদের রীতিমতো চমকেও দিয়েছে।
এই যেমন ফিফা’র অফিসিয়াল পেইজের কাস্টমাইজড রিলে তাদের গান ব্যবহারের আগে সবাইকে চমকে দিয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে আয়োজিত কনসার্টে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তোলা ব্যান্ড স্করপিয়ন্সের সঙ্গে এক মঞ্চে পারফর্ম করে। প্রশংসা কুড়িয়েছে ‘দ্য লিগ্যাসি ট্যুরের ইউএসএ-২০২৩’এর পারফরম্যান্স নিয়ে। নরওয়ের গায়ক, গীতিকার ও জলবায়ুকর্মী মার্তে উলফ যৌথভাবে ‘লেট দ্য লাইট ইন’ শিরোনামে গান প্রকাশের অভিজ্ঞতাও হয়েছে চিরকুটের। সমকালীন দেশীয় ব্যান্ডগুলোর মধ্যে চিরকুটই সর্বাধিক সিনেমায় প্লেব্যাক করার সৌভাগ্য অর্জন করেছে। এর বাইরেও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে নানা ধরনের আয়োজনে অংশ নিয়ে এ দেশের ব্যান্ড হিসেবে আলাদাভাবে দর্শকের মনোযোগ কেড়েছে চিরকুট। সুমি নিজেও ‘নদী রক্স’ থেকে শুরু ব্যাতিক্রমী কিছু আয়োজন করে চলেছেন। কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো– প্রতিটি অর্জনেই সুমি নিজের নামটি চিরকুটের কাগজেই লিখে রাখেন। বলেন, চিরকুটই তাঁর দ্বিতীয় পরিবার।