
পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে ইজিবাইক চুরি করতে গিয়ে জনতার হাতে ধরা পড়ে রিফাত বিন সাজ্জাদ (২৩) নামে এক যুবক। পরে তার মোবাইলে পাওয়া যায় ধর্ষণের ভিডিও।
শনিবার (৯ মার্চ) ভোররাতে উপজেলার রাধানগর হাজী সাহার আলী উচ্চ বিদ্যালয়সংলগ্ন এলাকায় মৃত ধজিব উদ্দীনের ছেলে তাহিরুল ইসলামের ইজিবাইক চুরি করে পালানোর সময় গ্রামবাসী চোরকে ধরে ফেলে। এ সময় স্থানীয়রা তাকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়।
জিজ্ঞাসাবাদে রিফাত জানিয়েছেন, তিনি এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে একপর্যায়ে তাকে মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করেন। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে যৌনাঙ্গ, স্তনসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। হত্যার পর ওই কিশোরীর মরদেহ নিয়ে রেললাইনে ফেলে আসেন। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।
চুরি করতে গিয়ে জনতার হাতে আটকের পর রিফাতের মোবাইল ফোনে এক নারীকে বেধে রাখার ভিডিও পাওয়া যায়। পরে সেই ভিডিওর বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদে এমন নৃশংস তথ্য পেয়েছে পুলিশ। রিফাতের বাড়ি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাঝগ্রামে।
সোমবার (১০ মার্চ) দুপুরে পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সী তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন এসব তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সী জানান, গত ১৪ জানুয়ারি জেলার আটোয়ারী উপজেলার কিসমত এলাকায় রেললাইনে অজ্ঞাতনামা এক নারীর ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। হত্যাকাণ্ড হলেও এ ঘটনার সূত্র উদ্ঘাটন করতে পারছিল না পুলিশ। ওই ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়। ঠাকুরগাঁওয়ের ভুল্লি এলাকার একটি পরিবার তাদের মেয়ে মনে করে ওই নারীর মরদেহ নিয়ে দাফন করেন।
পুলিশ সুপার আরও জানান, এই হত্যাকাণ্ডের পরও আসামি রিফাত বিন সাজ্জাদ একের পর অপরাধকর্ম চালিয়ে যেতে থাকেন। গত শনিবার দিবাগত রাতে আটোয়ারী উপজেলার রাধানগর এলাকার তাহিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে অটোরিকশা চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েন রিফাত। এ সময় স্থানীয়রা তাকে মারধর করেন। তার মোবাইল ফোনে একটি নারীকে বেধে রাখার ভিডিও দেখতে পায় মারধরকারীরা। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি অজ্ঞাতনামা ওই নারীকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দেন।
মিজানুর রহমান মুন্সী জানান, রিফাত বলেছেন যে তার মাকে নিয়ে গালি দেওয়ায় ওই নারীকে প্রথমে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। পরে যৌনাঙ্গ, স্তনসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে চাকু দিয়ে কেটে হত্যা করা হয়। তারপর মরদহ রেললাইনে ফেলে দেওয়া হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, রিফাতের বিরুদ্ধে আটোয়ারী থানায় ধর্ষণের পর হত্যা ও চুরির অভিযোগে দুটি মামলা হয়েছে। গতকাল রোববার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এদিকে ১৪ই জানুয়ারি আটোয়ারীর কিসমত এলাকায় রেললাইন থেকে উদ্ধার (মরদেহ) নারীর স্বজনেরা বলছেন, আটক রিফাত বিন সাজ্জাদের মোবাইল ফোনে পাওয়া নৃশংস হত্যার শিকার যে কিশোরীর ছবি পুলিশ দেখিয়েছে, সেটি তাদের কেউ নন।