জামায়াতের অফিসে অগ্নিসংযোগের এক যুগ পর মামলা, মৃত ব্যক্তিও আসামি

প্রকাশিত: ১১:০৬ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২৬, ২০২৪

নীলফামারী প্রতিনিধি:

নীলফামারীর ডোমারে বিক্ষোভ মিছিল-প্রতিবাদ সভায় বাঁধা, অফিসে হামলা-লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার প্রায় ১২ বছর পর ৭৩ জনের নামে আদালতে মামলা করেছে জামায়াতে ইসলামী। এ মামলায় অজ্ঞাত আরও ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আছে মৃত ব্যক্তির নামও।

গত ১০ সেপ্টেম্বর নীলফামারী জেলা জজ আদালতের বিজ্ঞ আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি হাফেজ আব্দুল হক। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করতে ডোমার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে নাম উল্লেখ করা আসামিদের মধ্যে একজন মৃত ব্যক্তির নাম পাওয়া গেছে। মামলার ৭৩ নম্বর আসামি দুলাল হক সরকার (৫৫) চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি মারা গেছেন। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের পাগলা বাজার এলাকার তবিবার রহমানের ছেলে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১২ সালে ৫ ডিসেম্বর দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার শিবির কর্মী মুজাহিদুল ইসলামকে হত্যার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে বাঁধা দেয় ডোমার থানা পুলিশের সদস্যরা। পুলিশের বাঁধায় সমাবেশ পণ্ড হয়ে যাওয়ায় জামায়াত নেতাকর্মীরা নিজ নিজ বাড়িতে চলে যাচ্ছিলেন। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বাজার সংলগ্ন জামায়াতের অফিসে গিয়ে নেতাকর্মীদের মারধর করে অফিস ভাঙচুর ও অফিসের ভিতরের মালামাল লুট করেন। তখন পুলিশের সহযোগিতা চাইলে উলটো জামায়াত কর্মীদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই অফিস ভাঙচুরের পর আওয়ামী লীগ কর্মীরা স্টেশন সড়কের অবস্থিত শিবিরের আরেক অফিসে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেন। এ ঘটনায় সে সময় জামায়াত মামলা করার আবেদন করলেও থানা সেই মামলা গ্রহণ করেনি।

মৃত দুলাল হোসেনের ছেলে সাজু ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত ৫ জানুয়ারি আমার বাবা মারা যান। একজন মৃত ব্যক্তিকে কেন আসামি করা হয়েছে সেটি বলতে পারবো না।

মামলায় ৩৬ নম্বর আসামি সাবেক স্বাস্থ্য পরিদর্শক বেলাল উদ্দিন বলেন, এক বছর আগে আমি অবসরে যাই। কী কারণে আমাকে মামলায় জড়ানো হয়েছে সেটা তারাই বলতে পারবেন। আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত না।

এদিকে মামলায় ২৮ নম্বর আসামি করা হয়েছে ডোমার সিনিয়র দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক আইনুল হককে। তিনি বলেন, জামায়াত নেতা বক্করের সঙ্গে আমার জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব আছে। বিষয়টি আমি জেলা আমিরসহ স্থানীয় জামায়াত নেতাদেরও অবগত করেছি। এখন দেখছি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যে মামলা করা হয়েছে সেখানে আমার নামও রয়েছে।

এ বিষয়ে মামলার বাদী উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি হাফেজ আব্দুল হক বলেন, ঘটনায় পর পরই আমরা মামলা করার আবেদন করেছিলাম। কিন্তু সেই মামলা আবেদন নেওয়া হয়নি। উলটো আমাদের লোকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সেই সময় যে মামলার ড্রাফট সাজানো হয়েছিল সেটা দিয়েই মামলা করা হয়েছে। নতুন করে কিছু সংযোজন-বিয়োজন করা হয়নি। এর মধ্যে একজন ভাই মারা গেছেন সেটা আমাদের জানা ছিল না। জানা থাকলে নামটা আসতো না।

ডোমার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুল ইসলাম বলেন, মামলার কোনো আসামি যদি মারা যান সেটি তদন্তপূর্বক নাম বাদ যাবে।