ঝিনাইদহে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

প্রকাশিত: ৪:১৩ অপরাহ্ণ, মার্চ ৩০, ২০২৪

জেলা প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের দারুস-শেফা প্রাইভেট হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় লাভলী বেগম (২৬) নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (২৯ মার্চ) দিবাগত রাতে তিনি মারা যান।লাভলী হরিণাকুণ্ডু উপজেলার তৈলটুপী গ্রামের এনামুল কবিরের স্ত্রী। এই দম্পতির সাফি নামে ৭ বছরের এক ছেলে সন্তান রয়েছে। স্বামীর চাকরির কারণে তারা কালীগঞ্জ শহরে থাকতেন।

স্বজনরা জানান, দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দিতে শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরের দারুস-শেফা প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার শরীরে অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসক রেক্সোনা পারভীন ইলোরা। লাভলী বেগম কন্যা সন্তানের জন্ম দিলেও তার শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকে। ভুল অস্ত্রোপচারে চিকিৎসক রেক্সোনা পারভীন প্রসূতির জরায়ু নারী কেটে ফেলেন। এরপরে রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় বিকেল ৪টার দিকে পুনরায় লাভলীকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে চলা দ্বিতীয় অস্ত্রোপচারের কথা বলে অপারেশন থিয়েটারেই রাখা হয় তাকে। স্বজনরা এ সময় রোগীর অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে অপারেশন থিয়েটারের ভেতর থেকে বারবার জানানো হয় রোগী ভালো আছে, সেলাই শেষ করেই তাকে বেডে দেওয়া হবে। দীর্ঘ সময় পার হলেও রোগীকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের না করেই স্বজনদের মনে সন্দেহ জাগে। এরপর একজন অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করে দেখেন রোগী অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। এ সময় চিকিৎসক রেক্সোনা পারভীন ইলোরা প্রসূতিকে যশোরে রেফার্ড করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

লাভলী খাতুনের স্বামী এনামুল কবির বলেন, দারুস-শেফা প্রাইভেট হাসপাতালের চিকিৎসক রেক্সোনা পারভীন ইলোরার ভুল চিকিৎসায় আমার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। রেক্সোনা পারভীন অপ্রয়োজনে তার জরায়ু কেটে ফেলেছেন। জরায়ু কেন কাটা হলো এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি। রোগীর শরীরের রক্তক্ষরণ দেখে চিকিৎসক রেক্সোনা নিজেই ঘাবড়ে যান। তখন চিকিৎসক বলেন, আমি সঙ্গে লোক দিচ্ছি আপনারা দ্রুত যশোর নিয়ে যান। অপচিকিৎসায় আমার স্ত্রীর মৃত্যুর জন্য জড়িতদের বিচার চাই।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত চিকিৎসক রেক্সোনা পারভীন ইলোরার মোবাইলে ফোন দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।কালীগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আলমগীর হোসেন বলেন, দারুস-শেফা প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা বিভিন্ন সময় অভিযোগ করলেও পরবর্তী সময়ে প্রাইভেট হাসপাতালটির মালিক পক্ষের সঙ্গে সমঝোতা করই শেষ পর্যন্ত হাসপাতালটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। এখন আবার ঘটনাটি শুনলাম, অবশ্যই এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।