টঙ্গীবাড়ী (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি:
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ীতে পদ্মা নদীতে যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবে দুই শিশু নিহত হয়েছে। নিহতরা হচ্ছে- নিহত ফাইজা নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার কানিপুরা গ্রামের ফারুকের মেয়ে ফাইজা (৬) ও টঙ্গীবাড়ী উপজেলার মান্দ্রা গ্রামের নজরুল বেপারীর মেয়ে শিপ্রা (১৫)। এ ঘটনায় আরও কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছে বলে স্বজনরা জানিয়েছেন। শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার হাসাইল গুদাড়াঘাটে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, টঙ্গীবাড়ী উপজেলার হাসাইল থেকে যাত্রীদের নদী পারাপার করে মোস্তফা নামে এক ব্যক্তির ট্রলার। প্রতিদিন ভোর থেকে রাত প্রর্যন্ত এ খেয়া ঘাটে যাত্রী পারাপার করা হয়। আজ শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে হাসাইল ঘাটের অপর প্রান্ত থেকে ৫০-৬০ জন যাত্রী নিয়ে ট্রলারটি চালিয়ে আসছিলেন চালক আলামিন। এ সময় বালুবাহী একটি বাল্কহেড ট্রলারটিকে ধাক্কা দিলে যাত্রীসহ ট্রলারটি ডুবে যায়।
এ ব্যাপারে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাইদুর রহমান বলেন, ট্রলারডুবির ঘটনার আমাদের এখানে এখন পর্যন্ত ৫-৬ জনকে আনা হয়েছে। এদের মধ্যে দুই শিশু হাসপাতালে আনার আগেই মারা গেছে।
ট্রলারের যাত্রী শরীয়তপুরের মো. রাজিব বলেন, আমি ও আমার কয়েকজন বন্ধু শরীয়তপুর থেকে ট্রলারে পার হয়ে টঙ্গীবাড়ী বাজারে মার্কেট করতে আসছিলাম। আমাদের ট্রলারে ৫০-৬০ জন যাত্রী ছিল। সন্ধ্যার একটু পরে নদীতে আমাদের ট্রলারটিকে বাল্কহেড ধাক্কা দিলে ট্রলারটি ডুবে যায়। আমি বাল্কহেডের নিচে তলিয়ে যাই। পরে অনেক কষ্ট করে বের হইছি। এ সময় অন্য একটি ট্রলার আমাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী জানান, তিনি তার স্বামী রানা ও তার আরও ৪ জন আত্মীয় ঢাকা হতে পদ্মা নদী পারি দিয়ে হাসাইলের ওপারে চরে ঘুরতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে ট্রলার পার হওয়ার সময় ৫০-৬০ জন ছিলেন। তিনি ডুবে যাওয়া ট্রলার থেকে ভেসে উঠলে অন্য একটি ট্রলার তাকে নদী হতে টেনে তুলে নিয়ে আসে। তার স্বামী রানাকে তিনি খুজেঁ পাচ্ছেন না।
এ ব্যাপারে অপর যাত্রী শাকিল বলেন, আমরা যখন ট্রলার দিয়ে পার হচ্ছিলাম তখন বাল্কহেডটিও আসছিল। ট্রলার চালক ও আমরা বারবার চিল্লাইয়া বলতেছিলাম এদিকে ট্রলার, কিন্তু সে কিছু না শুনে আমাদের ট্রলারের ওপর দিয়ে বাল্কহেড তুলে দেয়। আমরা ৫০-৬০ জন তলিয়ে যাই।
এ ব্যাপারে টঙ্গীবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাজিব খান বলেন, ট্রলারডুবির ঘটনায় দুইজন মারা গেছে। ঘাতক বাল্কহেডটি আটক করা হয়েছে। তবে বাল্কহেডের চালকসহ অন্যরা পালিয়ে গেছেন। এখন পর্যন্ত কেউ নিখোঁজ আছেন বলে কেউ আমাদের বলেনি। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।