
ডেস্ক রিপোর্ট:
ডিজিটাল আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের দুই প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপল ও মেটাকে ৭০০ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এর মধ্যে অ্যাপলকে ৫০০ মিলিয়ন ইউরো এবং ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটাকে ২০০ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা করা হয়েছে।
ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কমিশন এক বিবৃতিতে জানায়, প্রতিষ্ঠান দুটি ডিজিটাল মার্কেটস অ্যাক্ট (ডিএমএ) আইন লঙ্ঘন করেছে। ২০২২ সালে প্রণীত এই আইনে বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্ল্যাটফর্মের প্রতি উন্মুক্ত রাখার এবং ব্যবহারকারীদের স্বাধীনতা সুরক্ষার কথা বলা হয়েছে।
এই প্রথমবারের মতো ডিএমএ আইন লঙ্ঘনের কারণে জরিমানার মুখে পড়ল কোনো প্রতিষ্ঠান। যদিও এই আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ বার্ষিক আয়ের ১০ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা করা সম্ভব, তবুও এবার তুলনামূলকভাবে কম জরিমানা করা হয়েছে। কেন কম জরিমানা করা হলো, সে বিষয়ে ইইউ এখনও পরিষ্কার করে কিছু জানায়নি।
ইইউর কমিশনাররা এই সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিতে অনুপস্থিত ছিলেন। বিশ্লেষকদের ধারণা, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে চলমান শুল্ক বিরোধ এড়াতেই এমন কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। ট্রাম্প ইতোপূর্বে ইইউর ডিজিটাল আইনগুলোকে ‘অন্যায্য’ বলে মন্তব্য করেছেন।
ইউরোপীয় কমিশনের একজন মুখপাত্র জানান, এই জরিমানা শুধুমাত্র প্রতিযোগিতা রক্ষা এবং ইউরোপীয় ভোক্তাদের স্বার্থে আরোপ করা হয়েছে। অ্যাপলকে অ্যাপ স্টোরে কঠোর ও একচেটিয়া নীতিমালার জন্য শাস্তি দেওয়া হয়েছে, আর মেটাকে তথ্য সুরক্ষা ও ব্যবহারকারীর স্বাধীনতা লঙ্ঘনের জন্য দায়ী করা হয়েছে, কারণ তারা ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম-এ সাবস্ক্রিপশন মডেল চালু করেছে।
অ্যাপল তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, তারা ইইউর এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করবে। তাদের দাবি, এই আইন ব্যবহারকারীদের তথ্য সুরক্ষার ক্ষতি করতে পারে। মেটাও অভিযোগ করেছে, ইইউ তাদের ওপর অবিচার করছে এবং তাদের ব্যবসায়িক মডেল পাল্টাতে বাধ্য করছে।
তবে ইইউর ভোক্তা অধিকার ও সফটওয়্যার বিশ্লেষকরা এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। ভিডিও গেম নির্মাতা এপিক গেমসের প্রধান টিম সুইনি এই জরিমানাকে ‘বিশ্বব্যাপী ডেভেলপারদের জন্য ইতিবাচক বার্তা’ বলে উল্লেখ করেছেন।
জার্মানির সংবাদমাধ্যম ‘টাজ’ জানিয়েছে, এই জরিমানা কার্যকর হতে সময় লাগতে পারে, কারণ অ্যাপল ও মেটা আপিল করে এটি বিলম্বিত করতে পারে।