নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে ১২-১৫ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর হোসেন। আজ সোমবার (১৭ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘ভোটার টার্নআউট ঢাকার বিষয় বলব কম। খুবই কম। আমরা প্রকৃত হিসাব এখনও পাইনি। তবে ধারণা করা হচ্ছে ১২ থেকে ১৩ শতাংশ হতে পারে। সর্বোচ্চ হলে ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ হতে পারে। ফলাফলের পরে এটা চূড়ান্তভাবে বলা যাবে। ৭টি পৌরসভা নির্বাচন হয়েছে। সেখানে সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ৫০ শতাংশ ভোট পড়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের ভোটের কোন তথ্য আমাদের কাছে এই মুহুর্তে নেই।’
একজন প্রার্থীর ওপর হামলা হয়েছে-এতে কী সুষ্ঠু ভোট বলতে পারি? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘১২৪টি কেন্দ্রে ভোট হয়েছে। একটি কেন্দ্রের পরিস্থিতি দিয়ে তো বলা যায় না ভোট সুষ্ঠু হয়নি। আমরা সঠিক অবস্থাটা এখনো জানতে পারিনি। আমরা বিচ্ছিন্নভাবে কিছু তথ্য পেয়েছে। আমাদের মাধ্যমে কিছুটা জেনেছি। কিছুটা আমাদের সোর্স থেকে পেয়েছি। তারা জানিয়েছে-স্বতন্ত্র প্রার্থী যিনি ছিলেন- অনেক সমর্থকসহ কেন্দ্রের ভেতর ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন। সাথে ওনার অনেক ইউটিউবাররা ছিলেন। সেখানে কেবল বৈধ কার্ডধারীরা ঢুকতে পারেন। কিন্তু ইউটিউবাররা তো ঢুকতে পারে না। তিনি প্রচুর ইউটিউবার নিয়ে ঢোকার চেষ্টা করেছেন। প্রায় ৭০ জনের মত লোক ছিলো। তখন পুলিশ তাদের আটকে দিয়েছে। বলেছেন, প্রার্থী ঢুকতে পারবেন। কিন্তু তার সাথে যারা আছেন তারা ঢুকতে পারবেন না। তখণ তিনি সেখানে নাকি পুলিশের সাথে তর্কবিতর্ক করেছেন। পরে পুলিশ তাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। অর্থাৎ ভোট কেন্দ্রের মধ্যে কোন ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু রাস্তায় যখন তিনি বের হয়ে আসছেন তখন কে বা কারা ধাওয়া দিয়েছে। আপনারা যেটা বলেছেন শারিরীকভাবে অ্যাসল্ট করেছে। এটা অত্যন্ত দু:খজনক ঘটনা। এটা আমরা কামনা করি না। যারা এটা করেছে অবশ্যই অন্যায় কাজ করেছে। আমরা বেশ কিছু নির্দেশ দিয়েছি। ইতোমধ্যে একজনকে পুলিশ গ্রেফতারও করেছে। এর সাথে আরো যারা জড়িত আছে তদন্ত করে বের করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এবং আমাদের জানাতে বলা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা মোকাদ্দমা দায়ের করার কথা বলা হয়েছে।’
ভোটের হারে সন্তষ্টু কীনা- আমরা নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে শান্তিপূর্ণ ভোট হলেই সন্তুষ্টি প্রকাশ করি। কিন্তু ভোটাররা কেন যায়নি এর অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। সেই কারণগুলো আমি জানি না। আর অনুমান করে বলাও ঠিক হবে না। এর পেছনে অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। আপনারা সেটা বিচার বিশ্লেষণ করবেন। তখন আমরা জানতে পারবো কেন ভোটার আসেনি।
গোয়েন্দা সংস্থা এবং সরকারের পরামর্শে দুটি কিংস পার্টিকে নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে ১০ দলের এমন অভিযোগের জবাবে আলমগীর বলেন, ‘কেউ একজন অভিযোগ তো করতেই পারে। অভিযোগের তো ভিত্তি থাকতে হবে। নির্বান কমিশন কোন গোয়েন্দা সংস্থার কথায় চলে না। গোয়েন্দা সংস্থার কথায় তারা কাজ করে না। নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। এখানে আইন আছে কানুন আছেৃ এই আইন-কানুন যারা ফুলফিল করেছে.. যে দুটি রাজনৈতিক দল।’
ইসি আলমগীর বলেন, ‘কেন্দ্রে একটি অফিস থাকতে হবে। ২২টি জেলায় তাদের অফিস থাকতে হবে। এবং ১০০টি উপজেলায় অফিস থাকতে হবে। এটা প্রাথমিক ভাবে একটা তদন্ত করা হয়েছে। সেই রিপোর্ট আবার কতটুকু সত্য সেটা দেখার জন্য আরও উচ্চ পর্যায়ের কমিটি করে তা তদন্ত করা হয়েছে। দুটো কমিটির তদন্ত রিপোর্ট যেখানে মিলে গেছে। সব ঠিক আছে। সেই হিসেবে মাত্র দুটি পার্টি সব শর্তগুলো পুরণ করেছে। বাকিগুলো করেনি। তারজন্য তাদের দেওয়া হয়নি। এর সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। গোয়েন্দা সংস্থার কাছে আমরা রিপোর্ট চাইওনি, নেইওনি। গোয়েন্দা সংস্থার আমাদের কোন রিপোর্ট দেওয়ার কথাও নয়। সেখানে আমাদের ইন্টারটেইন করার বিষয়ও নেই।’
নির্বাচন কমিশন সরকারের অঙ্গ সংগঠনে পরিণত হয়েছে এমন অভিযোগের জবাবে আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। এটা গণতান্ত্রিক দেশ। গণতান্ত্রিক দেশে যেকোন মানুষ যে কাউকে যে কোন বিষয়ে মন্তব্য করতে পারেণ। সেই অধিকার তাদের আছে। এই অধিকার তো তাদের আছে করতেই পারেন। তবে কতটা সত্য মিথ্যা তা বিচার করবেন দেশের জনগণ।’