ক্রীড়া ডেস্কঃ
পূবেরগাঁও ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গত পরশু অনুশীলন করেছিল ফরচুন বরিশাল। সেখানে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ফ্রাঞ্চাইজিটির কোচ মিজানুর রহমান বাবুল জানিয়েছিলেন দলটির অধিনায়ক হবেন তামিম ইকবাল। তবে দেশসেরা এই ওপেনার চেয়েছিলেন নেতৃত্বের ভার দলে থাকা টাইগার অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজের কাঁধে দেখতে। মঙ্গলবার গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এমনটি জানিয়েছেন মিরাজ।
গতকাল ক্রিকেট বোর্ডে এসেছিলেন মিরাজ। সেখান থেকে নিজের কাজ শেষ করে বেরিয়ে গাড়িতে ঢুকে যাচ্ছিলেন, এমন সময় গণমাধ্যমকর্মীদের অনুরোধ রাখতে গিয়ে দাঁড়িয়ে খানিকটা কথা বলেন। সে সময়ই বিভিন্ন প্রসঙ্গে কথা বলেন তিনি। শুরুতে অধিনায়কের প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘এটা (অধিনায়কত্ব) এখনো আমি কোনো কিছু জানি না। এটা সম্পূর্ণ দলের মালিকের সিদ্ধান্ত। সে কীভাবে চায়। তামিম ভাই আমাকে বলেছিলেন, ‘তুই করলে ভালো হয়।’ তিনি চাইছেন যেন আমিই করি। তারপরও এটা দলের মালিকের সিদ্ধান্ত।’
এবারের আসরে সব দল গঠন হয়ে গেছে আগেভাগেই। ইতিমধ্যে নিজেদের মতো করে ক্যাম্প করে অনুশীলনও করা শুরু করে দিয়েছে সব ফ্রাঞ্চাইজিগুলো তবে কোন দলের নেতা কে তার নাম এখনো প্রকাশ্যে আসেনি। তবে মিরাজ আশাবাদী পরিকল্পনা করেই অধিনায়ক ঘোষণা করবে তাদের ফ্রাঞ্চাইজিটি। অনেক সময় আগে থেকেই অধিনায়কত্বের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে। তবে ফ্রাঞ্চাইজিরা একটু দেরি করে অধিনায়ক ঘোষণা করে। তবে তাদের ব্যাপারটি একটু ভিন্ন। মিরাজের ভাষ্য, ‘এটা (অধিনায়ক ঘোষণায় দেরি) সত্যি কথা বলতে, এটা দলের মালিকরাই বলতে পারবে যে তাদের কী পরিকল্পনা, তারা কীভাবে চায়। আবার হতে পারে, এটা আগে থেকেই সিদ্ধান্ত হয়ে যায়। তবে বাইরে পরে জানায়। এটা সম্পূর্ণ তাদের ব্যাপার, ম্যানেজমেন্টের ব্যাপার। আমি জানি না, বলতেও পারছি না।’
বিপিএলে এবার বরিশালের হয়ে খেলবেন দেশের ক্রিকেটের পঞ্চ পাণ্ডবের তিন জন। তারা হলেন তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তাদের সঙ্গে রয়েছেন মিরাজও। এছাড়া দলটিতে খেলার সম্ভাবনা আছে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও ডেভিড মিলারের মতো ক্রিকেটারের। তবে বিপিএল ছাড়াও আরও কয়েকটি ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট চলায় এই দুই মারকুটে ক্রিকেটারকে পেতে খানিকটা বেগ পেতে হতে পারে। তবুও মিরাজ আশাবাদী তারা দলের সঙ্গে যোগ দেবেন। এই ব্যাপারে কথা হচ্ছে বলে নিশ্চিত করে বাংলাদেশি এই অলরাউন্ডার বলেন, ‘এটা তো তারা (ম্যাক্সওয়েল ও মিলার) কথা বলেছে। তারা ফ্রি থাকলে, খেলার জন্য এভেইলেবল থাকলে, আমাদের দলে খেলার সুযোগ থাকলে খেলতে পারবে। কথা বলেছে। যেহেতু সব জায়গায় খেলা আছে। অনেক ক্রিকেটারকে এভেইলেবল পাওয়া যাবে না। আমাদের যে দলটা গড়া হয়েছিল, অনেক ক্রিকেটারকে অনেক সময় পাবও না। শুধু আমরা নই, প্রত্যেক দলই পাবে না। এটা যেমন একটা সুবিধা, তেমনি একটা অসুবিধাও দলের জন্য। তো দেখা যাক, কী হয়।’
এদিকে আসন্ন আসরটি মাঠে গড়ানোর আগ থেকেই বিপিএলের টেকনিক্যাল কমিটি এবং বিসিবির বিভিন্ন কর্মকর্তা আশার বাণী শুনিয়ে আসছেন যে, আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে ব্যাটিং বান্ধব উইকেট করা হবে স্টেডিয়ামগুলোতে। শুধু তাই নয়, বলেছেন বিগত আসরগুলো থেকে এবারের পিচ হবে আরো উন্নতমানের। বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন মিরাজ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা তো খুবই ভালো। এর আগে বিপিএলে প্রথম থেকে ছিল না অনেক কিছু কিন্তু এবার সব কিছুই থাকছে। এতে প্রতিটা দলের জন্যেই এডভান্টেজ থাকবে এবং ভালো। সত্যি কথা বলতে বিপিএলটা সবসময়ই জমে। এবং খেলোয়াড়রাও আসরটিতে পারফর্ম করতে মুখিয়ে থাকে। আর দেশি ক্রিকেটাররা যদি এই আসরে পারফরম করতে পারে তাহলে এটা আমাদের জন্য ভালো হবে, কারণ সামনে বিশ্বকাপ রয়েছে।’
এছাড়া এই বিপিএলে পারফর্ম করার মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপের ভালো প্রস্তুতি হবে জানিয়ে টাইগার এই অলরাউন্ডার বলেন, ‘বিশ্বকাপের আগে বিপিএলটা হচ্ছে, এটা অবশ্যই ভালো একটা সুযোগ থাকবে, ভালো প্রস্তুতিটা থাকবে। বিশ্বকাপের আগে আমরা যদি এরকম একটা টুর্নামেন্ট খেলি, আমাদের বিরাট একটা সুবিধা থাকবে। এখানে পারফর্ম করলে বিশ্বকাপে গিয়ে খেলাটা সহজ হবে। গত বছর যেমন বিপিএল থেকে অনেক ভালো ভালো ক্রিকেটার এসেছে, শান্ত পারফর্ম করেছে, তাওহীদ হৃদয় পারফর্ম করেছে। ওদের কিন্তু এরপর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলাটা একটু সহজ হয়ে গিয়েছে। শান্ত কিন্তু টানা দেড় বছরে আন্তর্জাতিকে অনেক রান করেছে। হৃদয় অনেক রান করেছে। এটা কিন্তু একটা প্রভাব পড়ে যে, বিপিএলে ভালো খেললে আন্তর্জাতিকে আমরা সার্ভিস দিতে পারব। তো এখানে পারফর্ম করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ’