তারেককে অপছন্দকারীরা নির্বাচনে আসতে নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানকে যারা নেতা হিসেবে মানতে পারছেন না তারা নির্বাচনে আসতে নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছেন বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি নির্বাচনে না এলে তো নির্বাচন প্রতিযোগিতাপূর্ণ হবে না। সাংবাদিকদের এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমার কাছে তথ্য আছে যে, তারেক রহমানকে যারা নেতা হিসেবে মানতে পারছে না এবং তারেকের নেতৃত্ব মানতে যাদের কষ্ট হচ্ছে, তারা নির্বাচনে আসবে বলে আমরা জানি। নির্বাচনে আসার জন্য তারা এরইমধ্যে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মও তৈরি করেছে। আপনারা দেখেছেন, বিএনপির যে নেতৃত্ব, তা দলটির অনেকের পছন্দ না। যে কারণে তারা নতুন দল করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার চেষ্টা করছে। আবার বিএনপিরও অনেকেই প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করছে বলে জেনেছি।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির কথিত চেয়ারপারসন তারেক রহমান রাজনীতি করবেন না বলে মুচলেকা দিয়েছিলেন। এখন আবার তিনি রাজনীতির মাঠ গরম করছেন। তিনি একেক সময় একেক ঘোষণা দিচ্ছেন। ২৮ অক্টোবর সরকার পরিবর্তন হবে, তারপর বিএনপি যেভাবে চাইবে সেভাবেই দেশ চলবে— এমন ঘোষণাও দিয়েছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ যখন তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তখন তারা নিশ্চিত যে কোনোদিন নির্বাচনে আসতে পারবে না। যে কারণে তারা কুৎসা রটাচ্ছে ও অবান্তর কথা বলে যাচ্ছে। একটা কথা জোর দিয়ে বলতে পারি, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী সঠিক সময়ই নির্বাচন হবে। দেশের মানুষের মধ্যে উৎসবের আমেজ চলে এসেছে। সবাই নিজেদের প্রার্থীকে কীভাবে বিজয়ী করা যায়, সেগুলো নিয়ে চিন্তা করছে। কে নির্বাচনে আসল না, বা কে কী বলল, তা নিয়ে মানুষের কোনো উদ্বেগ নেই।’
নির্বাচনে লেভেল-প্লেয়িং ফিল্ড আছে কি না, জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘আপনারা দেখবেন, সেটি আছে কি না। রাজনৈতিক দলগুলো তো প্রচার-প্রচারণা চালাবেই। সবাই প্রচারণায় নামবে। তারা নিজেদের প্রার্থী নিয়ে আনন্দ করবে, উৎসব করবে।’
কিন্তু বিএনপি নেতারা তো কারাগারে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘তাদের যতগুলো নেতা কারাগারে, তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট মামলা আছে। তারা ভাঙচুর করেছে। বাস জ্বালিয়েছে ও মানুষ পুড়িয়েছে। এসব ঘটনা আমরা শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি ও তারা গ্রেপ্তার হয়েছে। এছাড়া, তারা বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্রদ্রোহী কর্মকাণ্ড করেছে। বিনা কারণে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।’
নির্বাচনকে ঘিরে কোনো নাশকতার আশঙ্কা রয়েছে কি না এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো খবর পাইনি। আর নাশকতা কেবল বাংলাদেশের মানুষ না, বিশ্বের কোনো সভ্য দেশের মানুষ পছন্দ করেন না। যতই নাশকতা করবে, ততই জনবিচ্ছিন্ন হবে। এতে তাদের ভাগ্যে জনসমর্থনের চেয়ে ধিক্কার জুটবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, মানুষ সেটিই চাচ্ছে। সেই আলোকিত বাংলাদেশ থেকে কেউ আর অন্ধকারে ফিরে যেতে চাচ্ছে না। নির্বাচনে নিজেদের পছন্দের মানুষকে নির্বাচিত করতে মানুষ তৈরি হয়ে আছে।’
হরতাল-অবরোধ স্বাভাবিক হয়ে গেছে। বিএনপি এখন কঠোর আন্দোলন করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সেই কঠোর আন্দোলন কী আমি জানি না। আমরা তো দেখলাম তারা ট্রেনের লাইন কাটার জন্য গিয়েছিল। পরে জনগণ তাদের ধরিয়ে দিয়েছে। বাসে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করলে জনগণ তাদের ধরে পুলিশে দিয়েছে। এতে প্রমাণ হয় যে, দেশের মানুষ সহিংসতা পছন্দ করে না। যেখানে জনসমর্থন নেই, সেখানে এ ধরনের চিন্তা কাম্য নয়।’
নির্বাচনে সহিংসতার হলে আগাম প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, ‘আমি আগেই বলেছি, নির্বাচনে পরাজিত হবে জেনেই তারা আসছে না। ২০০৮ সালে তারা ৩০টি আসন পেয়েছিল। ২০১৪ সালে তারা নির্বাচনে আসেনি। তারপরে জ্বালাও-পোড়াও করল। তারা সারা বাংলাদেশে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে।’