তিন দফা মেয়াদ বাড়লেও শেষ হচ্ছে না ৬০ কি.মি. সড়ক উন্নয়ন কাজ

প্রকাশিত: ২:১৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩, ২০২৪

সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ

তালা থেকে পাইকগাছা হয়ে কয়রা উপজেলা পর্যন্ত ৬০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সড়ক প্রশস্ত ও বাঁক সোজা করার শুরু হয় গত ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি। প্রায় ৫৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক উন্নয়ন কাজটি তিন বার সময় বাড়ালেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এখনো শেষ করতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে চরম ভোগান্তিতে তালা, পাইকগাছা, কয়রা, ডুমুরিয়া উপজেলার সাধারণ মানুষ।জানা যায়, আঠারোমাইল থেকে সাতক্ষীরার তালা হয়ে খুলনার কয়রা পর্যন্ত জনসাধারণের চলাচলের পথ নির্বিঘ্ন ও ঝুঁকিমুক্ত করতে বিগত সরকারের সড়ক ও জনপথ বিভাগ বাঁক সোজা ও সড়ক প্রসস্ত করতে এ প্রকল্পটি হাতে নেয়। তিন দফায় সময় বাড়িয়ে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা।খুলনা সড়ক ও জনপথ (সওজ) দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের ২১ জানুয়ারি আঠারোমাইল-তালা-কয়রা ভায়া পাইকগাছা সড়ক যথাযথ মানে উন্নতি করণ প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) পাস হয়। দরপত্র শেষে কাজ পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মোজাহার এন্টারপ্রাইজ। ২৯ ডিসেম্বর তাদের ৩৩৯ কোটি ৫৮ লাখ ৪৭ হাজার টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ২০২২ সালের ৩০ জুন কাজ শেষ করার কথা থাকলেও পরবর্তীতে নানা জটিলতার কারণে তিন দফায় এক বছর করে সময় বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর করা হয়। এতে প্রকল্পে ব্যয় বাড়ানো হয় ৪০ কোটি টাকা। এছাড়া প্রকল্পের মধ্য থেকে তিন কিলোমিটার অংশের জন্য আলাদা করে ব্যয় বাড়ানো হয় আরো ৫৫ কোটি টাকা। সবশেষ তালা থেকে পাইকগাছা পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে ছয় ফুট প্রশস্তকরণের জন্য বরাদ্দ করা হয় আরও ১০০ কোটি টাকা। এভাবে প্রকল্পের ব্যয় ১৯৫ কোটি বেড়ে ৫৩৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকায় পৌঁছায়।

কয়েকজন পথচারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যতবার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে, ততোবার ব্যয়ও বেড়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শেখ হেলালের। তাদের এখন আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এই কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত মানুষের চলেচলে ভোগান্তি শেষ হবে না। শেখ হেলাল পলাতক থাকায় এই কাজ কবে শেষ হবে তার কোনো নিশ্চয়তাও নেই। সরেজমিনে প্রকল্প এলাকায় দেখা যায়, ধীর গতিতে কাজ করছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন। এ কারণে পথচারীদের চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়া ও একাধিকবার সময় পেছানোর ফলে বিড়ম্বনা বেড়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে তারা সন্দেহ পোষণ করলেও আশাবাদী সড়কের কর্মকর্তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, সড়কের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল ৩০টি ঝুকিপূর্ণ বাঁক সোজা করা। এতে ১১.২৪ হেক্টর জমি অধিগ্রহণে ৭১ কোটি ৮২লাখ টাকা খরচ হয়েছে। যার কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।

তালা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার জাকির হোসেন বলেন, ‘তালা-কয়রা ভায়া পাইকগাছা অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবী এই সড়কের উন্নয়ন। সড়কটিতে অর্ধশতাধিক বাঁক রয়েছে। সড়কটি দ্রুত চওড়া করার পাশাপাশি বাঁক সোজা করার কাজ শেষ করা হোক। এতে এই অঞ্চলের মানুষের সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে ভোগান্তিও কমবে।’

খুলনা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান মাসুদ বলেন, ‘প্রকল্পটি চলতি বছরের ডিসেম্বরে শেষ হবে। জমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতার কারণে তিন বার সময় বাড়াতে হয়েছে। এখন দ্রুত গতিতে বাঁক সোজা করার কাজ চলছে। এছাড়া সড়ক প্রসস্ত করার কাজ হচ্ছে। আমরা ঠিকাদারকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছি।’