তিন দিনেও মেলেনি কোনো ত্রাণ সহায়তা

প্রকাশিত: ১০:৪২ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২৪, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:

টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
উপজেলার ১৮ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভার নতুন নতুন এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ।
উপজেলা সদরের সঙ্গে বিভিন্ন ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেসহ উত্তর চট্টগ্রামের বাণিজ্যিক জনপদ নাজিরহাট বাজার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন হাজারো ব্যবসায়ী। সেই সঙ্গে পানিতে ভেসে গেছে বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত মৎস্য পুকুর ও মুরগির খামার।

কাঁচা, পাকা, আধাপাকা রাস্তাসহ গ্রামীণ সড়কগুলো পানিতে ডুবে যাওয়ায় যানবাহন ও জনচলাচলে দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার নাজিরহাট-কাজিরহাট সড়ক, গহিরা-ফটিকছড়ি সড়ক কয়েক ফুট পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় ওইসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে হালদা ও ধুরুং নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার ভয়ে দিন কাটাচ্ছে নদী পাড়ের অন্তত কয়েক হাজার পরিবার।
জানা যায়, ভারী বর্ষণে পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার সুন্দরপুর, সমিতিরহাট, ভূজপুর, লেলাং, নারায়ণহাট, দাঁতমারা, বাগানাবাজার, হারুয়ালছড়ি, সুয়াবিল, পাইন্দং, রোসাংগিরী, নানুপুর, ফটিকছড়ি ও নাজিরহাট পৌরসভাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের অন্তত লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে জীবন যাপন করছে। এসব ইউনিয়নে তিন দিনেও সরকারি কোনো ত্রাণ সহায়তা পায়নি মানুষ।

কয়েকটি ইউনিয়নের আশ্রয় কেন্দ্র ও পানিবন্দী মানুষের মধ্যে শুকনা ও রান্না করা খাবার বিতরণ করতে দেখা গেছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) ফেনী নদীর সীমান্তবর্তী বাগানবাজার ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় পানিতে আটকে পড়া মানুষকে সেনাবাহিনী ও বিজিবির সহায়তায় উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। এছাড়া সুন্দরপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে পানিতে আটকে পড়াদের উদ্ধারে ফটিকছড়ি ফায়ার সার্ভিস ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কাজ করছে বলে জানা গেছে।

দাঁতমারা ইউপির সাবেক মেম্বার বোরহান উদ্দিন জানান, টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে তার ৬টি পুকুরের প্রায় ২০ লাখ টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এতে করে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।

ভূজপুর ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান শিপন বলেন, বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটবে। এতে কয়েক লাখ মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে। ইতোমধ্যে যেসব এলাকার মানুষ পানিবন্দী আছে, সেসব এলাকায় আমরা খবরা-খবর রাখছি এবং যেকোনো পরিস্থিতে আমরা মানুষের পাশে থাকবো।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ফটিকছড়িতে স্বরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে।

সেনাবাহিনী, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস সহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহযোগিতায় পানিবন্দী মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হচ্ছে। ইউএনও পানিবন্দী মানুষের ত্রাণ সহায়তায় বিত্তবানদের এগিয়ে আসারও অনুরোধ জানান।