লাইফস্টাইল ডেস্কঃ
বাড়ছে শীত। সন্ধ্যা হলেই লাইটের আলোর নিচে কুয়াশার আস্তর চোখে পড়ে। তখন অনেকেই একটু নিঃশ্বাস নিয়ে শীতকে স্বাগত জানাতেই পারেন। আবার অনেকেই হয়তো আঁতকে ওঠেন। শীত এলেই ঠান্ডা, সর্দি-জ্বরের ভয়। বাড়তি শীতে এই ভয় আরো বেশি হতে পারে। বাড়ির বয়োজ্যেষ্ঠরা তো বটেই, যারা বাইরে থাকেন চাকরির তাগিদে তাদেরও ভাবতে হয়। আর এই ভাবনার জায়গা থেকেই শীতের বাড়তি প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। সেটি কীভাবে নেবেন? পপুলার ডায়গনস্টিক সেন্টারের ডা. ফাতেমা ফারজানা দিচ্ছেন কিছু পরামর্শ—
প্রচুর পানি পান করুন
শীতের সময় তৃষ্ণা পায় কম। বাড়তি শীতে এই তৃষ্ণা আরো কম পাওয়ার কথা। তবে যত কমই হোক, শীতে প্রচুর পানি পান করার সুবিধা রয়েছে। প্রথমত, বাড়তি শীতে প্রচুর পানি পান করার মাধ্যমে ঠোঁট ও হাতের আঙুলের শুষ্ক অবস্থা কমাতে পারবেন। তাছাড়া পুরো সময়ই প্রচুর পানি পান করলে শ্বাসনালিতে মিউকাস তৈরি হয়ে রোগ-জীবাণু বের হয়ে যায়।
ঘরে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা করুন
শীত যখন বাড়ছে তখন ঘর বিষণ্ন করে রাখার প্রয়োজন নেই। সকাল ৮ টার পর থেকেই আস্তে আস্তে কুয়াশা সরে কাঁচা রোদ ভেসে আসতে শুরু করে। তখন থেকেই ঘরের দরজা-জানালা খুলে দিন। ঘরের ভেতর সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত রোদ প্রবেশ করুক। তাহলে ঘরের ভেতর স্যাঁতসেঁতে ভাব থাকবে না। তাছাড়া ঘরে আলো-বাতাস থাকলে ঘর উষ্ণ রাখাও সহজ হয়।
শরীর উষ্ণ রাখুন
যেভাবে বাড়ছে শীত তাতে অন্তত শরীর উষ্ণ রাখা জরুরি। শরীর উষ্ণ রাখার জন্য শীত-পোশাক পরুন। এক্ষেত্রে পাতলা বা স্টাইলিশ হুডির দিকে লক্ষ না রেখে বরং একটু মোটা জ্যাকেট পরুন। যদি অফিসে ব্যাগ নিয়ে যান তাহলে শাল নিয়ে যান। সন্ধ্যার পর বাইরে বেরুলে চাদর গায়ে চাপান। অফিস কিংবা ঘরে একটানা দীর্ঘক্ষণ বসে না থেকে কিছুক্ষণ পরপর হালকা মুভমেন্ট করুন।
যদি সর্দি লেগে যায়
শীতে কমন কোল্ড বা সর্দি-কাশি লেগেই থাকে, বিশেষ করে নাক বন্ধ হওয়া, নাক দিয়ে অনবরত পানি ঝরা এবং হাঁচিও হয় ঘন ঘন। মাথা ব্যথা, শরীর ব্যথা ও ম্যাজম্যাজ করা, দুর্বল লাগা ও ক্ষুধামন্দার পাশাপাশি হালকা জ্বরের প্রাদুর্ভাবও দেখা দেয়। জ্বর থাকলে প্যারাসিটামল ও সর্দি-কাশি থাকলে অ্যান্টিহিস্টামিন সেবন করা উচিত। সেটিও পরিস্থিতি বুঝে করতে হবে। যদি জ্বর-সর্দি বেশি থাকে তাহলে চিকিত্সকের পরামর্শ নেওয়াই ভালো।
গরম পানিতে গোসল করতে হলে
বাড়তি এ শীতে অনেকেই গরম পানি দিয়ে গোসল করেন। অনেকে একটু বেশি গরম পানিই ব্যবহার করেন। এমনটি না করাই ভালো। গরম পানি ব্যবহারে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। তাছাড়া ঠান্ডা-সর্দি আরো লাগার সুযোগ থাকে। গরম পানিতে গোসল করতে পারেন অবশ্যই। তবে পানিতে এমনভাবে গরম পানি মেশাবেন যাতে গোসলের পানির তাপমাত্রা স্বাভাবিক হয়ে আসে।
শরীর উষ্ণ রাখে এমন খাবার খান
শীতে এমন খাবার খেতে হবে যেগুলো শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে। যেমন পেঁয়াজ ঘাম ঝরাতে সাহায্য করে। গরম পানিতে আদা মিশিয়ে খেতে পারেন, শরীর উষ্ণ হবে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে। দুধের সঙ্গে কিংবা চায়ের সঙ্গে হলুদ খেলে শরীর ভেতর থেকে উষ্ণ থাকে। আবার সকালে যদি এক কাপ ব্ল্যাক কফি খেতে পারেন তাহলে মেটাবলিজম বাড়বে। এই মেটাবলিজম বাড়ার সঙ্গে শরীর উষ্ণ রাখার সম্পর্ক রয়েছে। সন্ধ্যার দিকে অফিস শেষে চীনাবাদাম, কাজুবাদাম বা আখরোট খেতে খেতে ফিরতে পারেন। স্বাস্থ্যকর স্ন্যাক্সটি আপনার শরীর উষ্ণ রাখতে সাহায্য করবে। ঠান্ডা কাশির সমস্যা থাকলে গুড়ের তৈরি গরম পানীয় খেয়ে দেখুন। রাস্তায় বের হলে বা সকালে ডিমও খেয়ে দেখতে পারেন। শরীর গরম থাকবে। আর প্রতিদিনকার খাবারে সবুজ-শাকসবজি তো রাখতেই হবে। বাড়তি শীতে শরীর উষ্ণ রাখাটাই চ্যালেঞ্জ।