দাবদাহে অসুস্থ হয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ ১৩ জন হাসপাতালে
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
জেলা প্রতিনিধি,ফরিদপুরঃ
ফরিদপুরের সালথায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিন শিক্ষক ও ১০ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের মধ্যে দুই শিক্ষার্থী এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের রামকান্তুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। শিক্ষকদের দাবি টিউবওয়েলের পানি পান করে এ অবস্থা হয়েছে। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, পানি পান করে নয়, তীব্র গরমে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।সালথা থেকে রামকান্তপুর ইউনিয়নগামী সড়কে উপজেলা ভূমি অফিসের পাশে বিদ্যালয়টি অবস্থিত। বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৩৮ জন।
রামকান্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. রবিউল ইসলাম বলেন, স্কুল দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। প্রধান শিক্ষকও মাতৃত্বকালীন ছুটিতে রয়েছেন। দীর্ঘদিন পর রোববার স্কুল খোলা হয়। সকালে স্কুলে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে প্রথমে বিদ্যালয়ের ক্লাস রুম ও মাঠে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করি। কিছু সময় কাজ করার পর তীব্র গরমে আমাদের সবারই পিপাসা লাগে।
সবাই স্কুলের টিউবওয়েল থেকে ঠাণ্ডা পানি পান করি। কিন্তু কিছুক্ষণ পর একে একে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বমি করতে শুরু করে এবং অসুস্থ হয়ে পড়ে।পরে অসুস্থদের দ্রুত সালথা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।এর মধ্যে রানিতা নামে এক শিশুর অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।অসুস্থদের মধ্যে শিক্ষক সুকলা রানী শীল, রেবেকা বেগম, রবিউল ইসলাম, শিক্ষার্থী সাদিহা, নাহিদ ও তৌকিয়ার নাম পাওয়া গেছে। বাকিদের নাম জানা যায়নি।
সালথা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল মমিন বলেন, প্রাথমিকভাবে টিউবওয়েলের পানিতে কোনো ধরনের বিষক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, ওই শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা গরমের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অসুস্থদের মধ্যে দুইজনের এখনো চিকিৎসা চলছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে সবাই শঙ্কমুক্ত রয়েছে।
সালথা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফায়েজুর রহমান বলেন, খবর পেয়েছিলাম টিউবওয়েলের পানি পান করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি টিউবওয়েলের পানিতে বিষক্রিয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বলেন, রোববার স্কুল খোলার পর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সকালে স্কুলে এসে টিউবওয়েলের পানি খেয়ে অসুস্থ পড়লে তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এখন সবাই মোটামুটি সুস্থ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছেন গরমের কারণে এ ঘটনা ঘটতে পারে।
ফরিদপুরের সিভিল সার্জন মো. ছিদ্দীকুর রহমান বলেন, আমি শুনেছি পানি পানের পর তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ওই টিউবয়েলটি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। ওই টিউবয়েলের পানি পরীক্ষা করে দেখার জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে বলা হয়েছে। এ পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।