
নিজেস্ব প্রতিবেদক:
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের দ্বীপ জেলা ভোলার মনপুরা উপজেলায় বিদ্যুতের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র ৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পান তারা। সোলার, আইপিএস এবং জেনারেটরের মাধ্যমে উৎপাদিত এই বিদ্যুতের জন্য টাকাও গুনতে হচ্ছে বেশি।
মনপুরায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো) নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ওজোপাডিকো বলছে, চারটি জেনারেটরের মধ্যে দুটি নষ্ট থাকায় মনপুরার বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা নেমে এসেছে অর্ধেকে। ১৫ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন মাত্র ৪২০ কিলোওয়াট। তবে উপজেলা সদরে ৩ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার সোলার প্ল্যান্ট নির্মাণের কাজ চলছে।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, মনপুরাকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করতে কাজ চলছে। পাশাপাশি সোলার প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজ চলছে। এরপরই সংকট কেটে যাবে।
মনপুরা ওজোপাডিকোর আবাসিক প্রকৌশলী কে এম ফরিদুল ইসলাম বলেন, সোলার পাওয়ার প্ল্যান্টের কাজ শেষ হলে আশাকরি সবাই বিদ্যুৎ পাবে। এছাড়াও একটি প্রকল্পে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে মনপুরায় বিদ্যুৎ আনার কাজও চলমান।
হাজিরহাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির একাধিক নেতা জানান, বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে মনপুরাবাসী।
হাজিরহাট শহরে বসবাসকারী একাধিক চাকরিজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিদ্যুৎহীন মনপুরার মানুষ বেশ বিপাকে আছে। মোটর দিয়ে পানি তুলতে না পারা, মুঠোফোনে চার্জ দিতে না পারা, টিভি, ফ্রিজ ব্যবহার করতে না পারায় জীবনযাপনের ধরন বদলে যাচ্ছে। অনেকে মনপুরা ছেড়ে চলে যাওয়ার পরিকল্পনাও করছেন। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নতুন জায়গায় পদায়ন পাওয়ার চেষ্টা করছেন।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিদ্যুৎহীন অবস্থায় তাদের পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। এক বছর ধরে সন্ধ্যার পর বিদ্যুৎ থাকে না। রাতে হারিকেন, কুপি জ্বালিয়ে গরমের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। গরমের সঙ্গে মশার কামড়ে অসুস্থ হয়ে অনেককে হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। কিন্তু হাসপাতালেও বিদ্যুৎ থাকছে না।