দুইশ বছরের ইছামতির মেলায় মানুষের ঢল

প্রকাশিত: ১:৪৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২০, ২০২৪

জেলা প্রতিনিধি,চট্টগ্রামঃ 

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জে দুইশ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী ইছামতি মেলা দেখতে মানুষের ঢল নেমেছে। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) এই গ্রামীণ বৈশাখী মেলা উপলক্ষে হাজার হাজার দর্শনাথীর সমাগমে মুখরিত হয় মেলা প্রাঙ্গণ। বাংলা বর্ষের ৬ বৈশাখ মেলা ঘিরে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শতাধিক দোকানী বিভিন্ন পণ্যের পসরা নিয়ে বসেন।গ্রামীণ ঐতিহ্য ধরে রাখতে ও ক্রেতাদের মন আকৃষ্ট করতে মৃৎ শিল্পীরা মাটির বিভিন্ন খেলনা, হস্তশিল্পীরা বাঁশ, বেত, কাঠ, লোহা, শঙ্খের তৈরি বিভিন্ন পণ্যের পসরা নিয়ে বসেন মেলায়। মেলায় বসেছে বিভিন্ন খেলনা, খাবার ও নিত্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রের দোকানও।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুইশ বছরের পুরোনো সনাতন ধর্মালম্বীদের ইছামতি দেবীর মন্দিরে প্রতিবছর পূজা ও উৎসব হয়। এই উৎসবকে ঘিরে মন্দির সংলগ্ন জমিতে মেলা বসে। পর্যায়ক্রমে এই মেলায় সকল ধর্মালম্বীদের উপস্থিতিতে সর্বজনীনতা লাভ করেছে। বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের মধুর শব্দে পুরো মেলা প্রাঙ্গণে এক উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

প্রায় সব ধর্মের লোকের সমাগম ঘটে মেলায়। সারাদিন চলে পূজা অর্চনা। মেলায় দেশ বিদেশের হাজার হাজার দর্শনাথী ছুটে আসে। অনেকে মানত করে মন্দিরের পাশে অবস্থিত বট গাছের গায়ে সূতো জড়িয়ে দেয়। মেলা উপলক্ষে মন্দির ও মেলা কমিটি সাজসজ্জ্বা থেকে শুরু করে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। মেলার পরদিন চতুষ্প্রহর ব্যাপী নামসংকীর্ত্তন অনুষ্ঠিত হয় বলে জানান মেলা কমিটির তত্ত্বাধায়ক কালু কুমার দে।

মেলায় কুমিল্লার পদুয়া থেকে আসা দোকানী মৃৎশিল্পী পরিমল চন্দ্র পাল বলেন, ঐতিহ্যবাহী ইছামতির মেলায় আমি প্রতিবছর বিভিন্ন মাটির তৈরি জিনিস নিয়ে আসি। বিকিকিনি শেষে ভালোই লাভ হয়।মেলা কমিটির তত্ত্বাবধায়ক কালু কুমার দে বলেন, আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও সভ্যতার একটি অংশ বৈশাখ। বৈশাখে অনুষ্ঠিত ইছামতির মেলাও সেই ঐতিহ্যের অংশ। যেখানে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের উপস্থিতি জানান দেয় আমরা বাঙালি।

ইছামতি মেলা উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক সুমন দত্ত ও সদস্য মিন্টু কুমার পাল বলেন, দুইশ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী ইছামতির মেলায় বলী খেলা, পালাগান ও আসরগান হলেও বর্তমানে হয় না। তবে বাঙালির ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে আগামীতে আরও সুপরিসরে মেলা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তারা।মেলায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা জোরারগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম বলেন, অসাম্প্রদায়িক দেশে যেন সাম্প্রদায়িক কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য আমরা তৎপর ছিলাম। খুব সুন্দরভাবে এবারের মেলা শেষ হয়েছে।