দেশ সেবা ও মানব কল্যাণে স্কাউটিংকে কাজে লাগানোর আহ্বান রাষ্ট্রপতির

প্রকাশিত: ১০:৪৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২০, ২০২০

স্কাউট আন্দোলন জোরদারের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব আরোপ করে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ দেশ ও মানব কল্যাণে স্কাউটিংকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘স্কাউটিং লেখাপড়ার পাশাপাশি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একজনকে সুনাগরিক হতে সহায়তা করে। দেশ সেবা ও মানব কল্যাণে স্কাউটিংকে কাজে লাগাতে হবে।’ গাজীপুরের মৌচাকে জাতীয় স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ‘৯ম জাতীয় কাব ক্যাম্পুরী-২০২০’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।


বাংলাদেশের চিফ স্কাউট আব্দুল হামিদ আরো বলেন, ‘স্কাউটিংয়ের শিক্ষা ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে প্রতিফলিত করা গেলে জাতীয় উন্নয়ন গতিশীল হবে।’ বিশ্বব্যাপী স্কাউট আন্দোলনের প্রশংসা করে তিনি বলেন, স্কাউটিং কর্মকান্ড নতুন প্রজন্মকে আধুনিক, অগ্রগতিশীল ও সৃজনশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়তা করে। স্কাউটিং সমাজকে এগিয়ে নিতেও সহায়তা করে।
রাষ্ট্রপতি কাব স্কাউটস ও স্কাউটার্সদের উদ্দেশ করে আরো বলেন, ‘আগামী দিনে তোমারাই বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবে। তোমরাই জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত ধর্মনিরপেক্ষ উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবে।’
অনেক ত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি স্কাউটদের প্রতি নিজেদেরকে যোগ্য ও দক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, তোমরা বিভিন্ন সমাজ সেবা এবং উন্নয়নমূলক কাজে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। তিনি বৃক্ষরোপণ, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র রক্ষার এবং বৈশ্বিক উষ্ণতার বিরুদ্ধে গণসচেতনতামূলক প্রচারণা চালানোর পরামর্শ দেন। চিফ স্কাউট ঘূর্ণিঝড়, ভবন ধস এবং অগ্নিকান্ডের ঘটনাসহ যে কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগকালীন উদ্ধার অভিযানকালে স্কাউটদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।দেশপ্রেমিক এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিসাবে স্কাউট আগামী দিনগুলোতে তার সেবামুখী কর্মকান্ড সম্প্রসারণ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে রাষ্ট্রপতি হামিদ মাদক, সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, বাল্য বিবাহ এবং ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে গণসচেতনতা তৈরি করতে স্কাউটদের অতীতের মতো সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, নতুন প্রজন্ম যারা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে দেখেনি, জাতি গঠনে যুক্ত হওয়ার লক্ষ্যে তাদেরকে ইতিহাস থেকে অবশ্যই শিক্ষা গ্রহন করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারের নিরলস কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপ্রধান বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম, যথা ‘ভিশন-২০২১’, ‘ভিশন ২০৪১’, ‘ডেল্টা প্ল্যান ২১০০’ এবং ‘জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) ২০৩০ এর সঙ্গে মিল রেখে ইতিবাচক, আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে অংশীদার হওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে স্কাউট আন্দোলনে অসামান্য অবদানের জন্য স্কাউট চিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীকে ‘রাষ্ট্রপতির রোভার স্কাউট অ্যাওয়ার্ড’ এবং ৪৮ শিক্ষার্থীকে ‘রাষ্ট্রপতির স্কাউট অ্যাওয়ার্ড’ তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে তিনি স্মারক ডাকটিকিটও অবমুক্ত করেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এ কে এম মোজাম্মেল হক, বাংলাদেশ স্কাউটসের সভাপতি মো. আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ স্কাউটসের চিফ ন্যাশনাল কমিশনার ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার ডা. মো. মোজাম্মেল হক খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।