ডেস্ক রিপোর্ট :
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রার আমন্ত্রণে চলতি মাসে নয়া দিল্লি যাচ্ছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। দুই দেশের সম্পর্কের সামগ্রিক বিষয়ে আলোচনা করতে ভারত সফরে যাবেন তিনি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র পররাষ্ট্রসচিবের নয়া দিল্লি যাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, এ মাসে পররাষ্ট্রসচিব ভারত যাবেন। তবে কেন হঠাৎ করে পররাষ্ট্রসচিবের নয়া দিল্লি সফর, তা নিয়ে কিছু জানায়নি সূত্রটি।
ঢাকার একটি কূটনৈতিক সূত্র জানায়, বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ পরামর্শক সভা (এফওসি) বৈঠকে বসার জন্য মাসুদ বিন মোমেনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বিনয় কোয়াত্রা। সাধারণত এফওসিতে দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়ে থাকে। তবে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে পররাষ্ট্রসচিবের নয়া দিল্লি সফর নির্বাচন ইস্যুতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ মনে করা যায়।
অন্য আরেকটি কূটনৈতিক সূত্র বলছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় বাংলাদেশ-ভারতের এফওসি অনুষ্ঠিত হয়েছে। আট মাসের ব্যবধানে দেশটির সঙ্গে এফওসি করতে যাচ্ছে ঢাকা। এর আগে ভারত ছাড়া অন্য কোনো দেশের সঙ্গে এত কম সময়ের ব্যবধানে এফওসির নজির বাংলাদেশের ক্ষেত্রে না থাকার সম্ভাবনাই বেশি। তবে দুটি দেশ প্রয়োজন মনে করলে যেকোনো সময় এফওসি করতেই পারে।
এর আগে নয়া দিল্লিতে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে আসন্ন নির্বাচন সামনে রেখে আলোচনায় ছিল বাংলাদেশ প্রসঙ্গ। ওই বৈঠকে নয়া দিল্লির পক্ষ থেকে ওয়াশিংটনকে জানানো হয়েছে, নির্বাচন কীভাবে হবে, তা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে বাংলাদেশ নিয়ে নয়া দিল্লির অবস্থানের বিষয়ে এখনো খোলামেলা কোনো মন্তব্য করেনি ওয়াশিংটন।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে ১৪ নভেম্বর (মঙ্গলবার) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, ভারতের সিদ্ধান্তের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিমত নেই। একই প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন বলেন, ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের টু প্লাস টু পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যে আলোচনা হয়েছে, তা ওই দুই দেশের নিজস্ব ব্যাপার।
বাংলাদেশকে নিয়ে নয়া দিল্লি ও ওয়াশিংটের একমত না হওয়ার আলোচনা রয়েছে। কেননা, টু প্লাস টু বৈঠকের পর সম্প্রতি বাংলাদেশের তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দলকে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে চিঠি লিখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।
গত সোমবার (১৩ নভেম্বর) রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগ নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র স্টিফেন ইবেলি। সেখানে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র শান্তিপূর্ণ উপায়ে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। পাশাপাশি সহিংসতা পরিহার করে সব পক্ষকে সংযমী হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, কোনো ধরনের শর্ত ছাড়াই সংলাপ চায় যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যে ভিসানীতি ঘোষণা করা হয়েছে, সেটিও তুলে ধরা হয়েছে।