নিরাপত্তার চাদরে বঙ্গভবন

প্রকাশিত: ৪:০৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৪, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ দাবিতে গতকাল বুধবারও বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ করেছেন ছাত্র-জনতা। বিকেল থেকে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। এর আগে সকাল থেকেই বঙ্গভবনের সামনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।

লোহার ব্যারিকেডের পাশাপাশি তারকাটা ও কংক্রিটের প্রতিবন্ধক বসানো হয়। বঙ্গভবনের ফটকের সামনে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব, এপিবিএন ও বিজিবির সদস্যরা সতর্ক অবস্থান নেন।
এর আগে মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবিতে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ শুরু হয়। রাজধানীর ছাত্র-জনতা বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে বঙ্গভবনে প্রবেশের চেষ্টা করেন তারা। এ সময় পুলিশ লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। পরে সেনাসদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। রাত ১০টার দিকে আন্দোলনকারীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে ২৫ পুলিশ সদস্য আহত হন। রাত ২টার দিকে বিক্ষোভকারীরা বঙ্গভবন এলাকা ছেড়ে যান। তবে কয়েকজন অবস্থান নেন।

এ প্রেক্ষাপটে গতকাল সকাল থেকেই বঙ্গভবনের সামনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব, এপিবিএন ও র‍্যাব সদস্যরা সশস্ত্র অবস্থানে রয়েছেন। এপিসি, জলকামান ও রায়টকার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সকাল থেকে জনসমাগম ছিল না। তবে মাথায় পতাকা বাঁধা কয়েকজনকে বসে থাকতে দেখা গেছে। তাদের তিনজন রাত থেকে সেখানে অবস্থান করছিল বলে জানান। তাদের ভাষ্য, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে তারা সাতজন অবস্থান করেন। কয়েকজন অসুস্থবোধ করায় চলে যান। তিনজন আছেন। রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা সেখান থেকে সরবেন না। সকাল থেকে একজন নারী তাদের সঙ্গে যুক্ত হন।

সকাল থেকেই দু-চারজন করে উৎসুক জনতা বঙ্গভবনের সামনের চিত্র দেখতে যান। বিকেল ৪টা থেকে লোকজন জড়ো হতে থাকেন। শতাধিক ছাত্র-জনতা জড়ো হন। তারা রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবিতে নানা স্লোগান দেন। রাত ৮টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তারা অবস্থান করছিলেন। তবে বঙ্গভবনের সামনের সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল।

মতিঝিল বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার শাহরিয়ার আলী বলেন, গতকাল বঙ্গভবনের ফটকের সামনে তিনস্তরে প্রতিবন্ধক বসানো হয়। এ ছাড়া ফোর্সও বাড়ানো হয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, র‍্যাব, এপিবিএন, বিজিবির সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ওই দিনই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেন, শেখ হাসিনা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং তিনি তা গ্রহণ করেছেন। ৮ আগস্ট অন্তর্র্বতী সরকার গঠিত হয়।

সম্প্রতি মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর এক প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার পদত্যাগ-সংক্রান্ত তথ্য উঠে আসে। মতিউর রহমানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি জানান, তিনি শুনেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগ সংক্রান্ত তাঁর কাছে কোনো দালিলিক প্রমাণ বা নথিপত্র নেই। এর পর নতুন করে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন শুরু করে ছাত্র-জনতা।