নিহতের পরিবারকে আর্থিক সহায়তার কথা বলে প্রতারণা

প্রকাশিত: ১২:১৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৮, ২০২৪

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:

প্রতারণার শিকার হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সিফাত উল্লাহর (১৯) পরিবার। প্রতারক চক্রটি কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছে এক লাখ ৫৬ হাজার টাকা। গত রোববার (৬ অক্টোবর) এ ঘটনা ঘটে।

নিহত সিফাত উল্লাহ কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার মুনিয়ারীকান্দা গ্রামের হাফেজ মাওলানা নুরুজ্জামানের ছেলে। তিনি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা এমদাদুল উলূম জামিয়া ইসলামীয়া মাদরাসার সরহে বেকায়া জামায়াতের শিক্ষার্থী ছিলেন।
জানা গেছে, সিফাত উল্লাহকে হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়ে তার দরিদ্র পরিবারটি। ঘটনার পর তার বাড়িতে দীর্ঘদিন ছিল শোকের মাতম। এরপর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে তার পরিবারকে ২ লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়। পরে বিএনপির পক্ষ থেকে আরও ১ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা করা হয়। তবে ছেলে হারানোর শোক কাটতে না কাটতেই পরিবারটির কাছ থেকে অভিনব কায়দায় ১ লাখ ৫৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারক চক্র। রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

সিফাত উল্লাহর বাবা হাফেজ মাওলানা নুরুজ্জামান জানান, ৬ অক্টোবর দুপুর ১২টার দিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরিচয় দিয়ে একটি ফোন আসে। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে বলা হয় ‘শহীদ সিফাত উল্লাহর পরিবারের নামে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। আজ প্রথম ধাপে ২ লাখ টাকা পাঠাবে বাকি ৩ লাখ আগামীকাল পাঠানো হবে। সেইজন্য ব্যাংকের একাউন্ট নম্বর দিতে হবে।’
তখন সিফাত উল্লাহর বাবা জানান, নিজের নামে কোনো ব্যাংক একাউন্ট নেই। তখন পরিবারের অন্য কারো একাউন্ট নম্বর দিতে বলা হয়। এরপর নিহতের চাচা ঢাকায় অবস্থানরত অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী আমিনুল হকের একাউন্ট নম্বর দেওয়া হয়।

তিনি আরও জানান, কিছুক্ষণ পর জানানো হয় এটিএম কার্ডের ছবি পাঠাতে হবে। পরে হোয়াটসঅ্যাপে এটিএম কার্ডের ছবি পাঠানো হয়। কিছু সময় পর জানতে পারেন প্রতারক চক্রটি সিফাত উল্লাহর চাচার একাউন্ট থেকে ১ লাখ ৫৬ হাজার ১৫০ টাকা উঠিয়ে নিয়ে গেছে। পরবর্তীতে বারবার ওই নম্বরে ফোন দিলেও রিসিভ করেনি। পরে ঢাকার কাফরুল থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন তার চাচা আমিনুল ইসলাম।

সিফাতের বাবা মাওলানা নুরুজ্জামান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ছেলে হারিয়ে এমনিতেই আমার সব শেষ হয়ে গেছে। আমার স্বপ্ন ভেঙে গেছে। আমি খুব দরিদ্র মানুষ, এই সময়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় আমি বড় বিপদে পড়ে গেছি।