পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) শের-ই-বাংলা হলে মাদক সেবনরত অবস্থায় ৩ জন বহিরাগতকে আটক করা হয়েছে। আটকরা হলেন- দুমকি উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের জলিসার মো. নাজমুল হুদা (২৬), মো. হাসান সর্দার (২৪) এবং মো. আবু বকর (২৫)।
সোমবার রাত ১০টার সময় এ ঘটনা ঘটে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হলের নিয়মিত তদারকি এবং রুম পুনর্বণ্টনের জন্য শের-ই-বাংলা হলে যায় হল প্রভোস্ট টিম। এর মধ্যে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারেন যে- হলের ছাদে কিছু বহিরাগত মাদক সেবন করছে। হল প্রভোস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম ও ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টাকে অবহিত করে ছাদে যান এবং বহিরাগতদের ধাওয়া দেন। তখন প্রক্টরের নির্দেশে পুরো শের-ই-বাংলা হলের মেইন গেইট আটকে দিয়ে তালা দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীসহ প্রভোস্ট ধাওয়া দিলে তাদের মধ্যে একজন (নাজমুল) হলের ৩০৪ নম্বর রুমে গিয়ে অবস্থান নেয়, সেখান থেকে হল প্রভোস্ট তাকে আটক করেন এবং প্রভোস্ট কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। তারপর খবর পাওয়া যায় যে, আরো দুইজন বহিরাগত (হাসান সর্দার ও আবু বকর) ছাদের কার্নিশে লুকিয়ে রয়েছেন। শিক্ষার্থীরা তাদের ধরে প্রভোস্ট কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে নাজমুল যেই কক্ষে (৩০৪) ছাদ থেকে পলায়ন করে অবস্থান নেয় সেই কক্ষে অভিযান পরিচালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম। অভিযানে বিভিন্ন ধরনের মাদক যেমন: ইয়াবা, গাজা ও মাদক সেবনের আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র বোতলের ছিপি, ফয়েল পেপার উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ওই কক্ষ থেকে ব্যাডমিন্টন র্যাকেটের কভারে মোড়ানো অবস্থায় একটি সোজা দা এবং একটি বাকা দা উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে রাত ১১টা ৩০ মিনিটে দুমকি থানা পুলিশের কাছে তাদেরকে সোপর্দ করা হয়।
এ ব্যাপারে ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান বলেন,
একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে দিনের পর দিন বহিরাগত অবস্থান করে, মাদকসেবন করে- যা বিশ্ববিদ্যালয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী, এতে করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাদকের প্রাচুর্য ও অবাধ লেনদেন হচ্ছে, যার কারণে সহজেই মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আবুল বাশার খান বলেন, ‘এ ধরনের অভিযান চালু রাখবো, আমরা ক্যাম্পাস চাই মাদকমুক্ত। ২৫ সেপ্টেম্বরের নোটিশের প্রেক্ষিতে এ ধরনের শুদ্ধি অভিযান চলতে থাকবে। এর জন্যে সকলের কাছে সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছি।’
এই বিষয়ে নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মাদকের বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় সবকিছুই করা হবে। ক্যাম্পাসের ভেতরে মাদক সেবন, কেনা-বেচা বন্ধে তল্লাশি কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’
উল্লেখ্য, গত ২৫ সেপ্টেম্বর প্রক্টরিয়াল বডি এক জরুরি নোটিশে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের আড্ডা, হলে অবস্থান, মাদক সেবন, কেন্দ্রীয় ও হল মাঠে ফুটবল খেলা, অবৈধভাবে ওয়াইফাই ব্যবহার নিষিদ্ধ করে।