এসএম দেলোয়ার হোসেন:
পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জের ধরে বাসা থেকে ডেকে পাঠাও চালক বন্ধুকে হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। এমন অভিযোগে ঘটনার ছায়া তদন্তে নেমে এর সত্যতাও খুঁজে পেয়েছে র্যাব। এরপর অভিযানে নেমে অভিযুক্ত দুইজনকে নজরদারিতে রাখা হয়। পাঠাও চালক রিফাত হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারীসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গ্রেফতাররা হলেন- মূল পরিকল্পনাকারী ও প্রধান আসামি তাইজুল ইসলাম ওরফে কাজল (৩২) ও তার সহযোগী এমারত হোসেন (৩৮)। আজ সোমবার (১২ জুন) দুপুরে রাজধানীর উত্তরায় র্যাব-১ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুহাম্মদ মোসতাক আহমদ।
তিনি বলেন, রাইড শেয়ারিং সার্ভিস পাঠাও চালক রিফাত ও কাজল পূর্ব পরিচিত এবং তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সর্ম্পক ছিল। তবে মাসখানেক আগে ব্যবসায়িক দেনা-পাওনা নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। রিফাত পাওনা টাকা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানান। এতে ক্ষিপ্ত হন কাজল। ক্ষোভ থেকেই রিফাতকে হত্যার পরিকল্পনা করেন কাজল।
পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৫ জুন তুরাগ নদীতে রিফাতকে নিয়ে ঘুরতে যান কাজল। সেখান থেকে রাতে ফেরার আগে তর্ক-বিতর্কের মধ্যে রিফাতকে মারধর করা হয়। এরপর মাঝির সহযোগিতায় রিফাতকে হাত-পা বেঁধে তুরাগ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
গত ৬ জুন বিকেলে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার রোদ্রপুর এলাকায় তুরাগ নদীতে একটি মরদেহ ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে পরিবার সূত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিশ্চিত হয় মরদেহটি রিফাতের।
ওই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী কাজলসহ দুজনকে গ্রেফতারের পর র্যাব-১ জানিয়েছে, পাঠাওচালক রিফাতকে বাসা থেকে ডেকে গুম করার উদ্দেশ্যে তুরাগ নদীতে ডুবিয়ে হত্যা করা হয়। এর মূল পরিকল্পনাকারী কাজল।
র্যাব কর্মকর্তা মুহাম্মদ মোসতাক আহমদ বলেন, মরদেহ উদ্ধারের পর ভুক্তভোগী পরিবার মুখমণ্ডল ও পরিধেয় বস্ত্র দেখে মরদেহটি শরীফ হোসেন রিফাতের (২০) বলে শনাক্ত করে। ওই ঘটনায় রিফাতের বাবা মো. ফারুক বাদী হয়ে জিএমপির গাছা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য উন্মোচনের জন্য র্যাব-১ ছায়া তদন্ত শুরু করে।
রোববার (১১ জুন) রাতে র্যাব-১ এর একটি দল ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কাজলকে গ্রেফতার করে। কাজল টঙ্গী পূর্ব থানার আব্দুর রশিদের ছেলে।
কাজলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই রাতে রিফাত হত্যায় সহযোগী নৌকার মাঝি এমারত হোসেনকে গাজীপুরের গাছা থানার পলাশোনা খেয়াঘাট এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার কাজলকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র্যাব-১ অধিনায়ক বলেন, রিফাত ও কাজল পূর্ব পরিচিত এবং তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সর্ম্পক ছিল। আনুমানিক এক মাস আগে থেকে তাদের মধ্যে ব্যবসায়িক দেনা-পাওনা নিয়ে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। রিফাতের পরিবারের বক্তব্য, কাজল ২০ হাজার টাকা পেতেন। আর কাজলের দাবি পাওনা টাকার পরিমাণ ২৭ হাজার। রিফাত পাওনা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে কাজল ক্ষিপ্ত হন। রিফাতকে শায়েস্তা করতে হত্যার পরিকল্পনা করেন কাজল।
পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৫ জুন বিকেল ৫টার দিকে কাজল তার সহযোগী সোহাগের সহায়তায় রিফাতকে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে বাসা থেকে ডেকে এনে তুরাগ নদী পার হয়ে তারা সাতাশকান্দি চরে যান।
পরিকল্পনা অনুযায়ী সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে অপেক্ষা করেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে তারা নদীর অপর পাশ থেকে বাসায় যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হন। এসময় ব্যবসায়িক লেনদেনের কথা তুলে তর্ক-বিতর্কে জড়ান কাজল। একপর্যায়ে কাজল ও সোহাগ মিলে রিফাতকে কিল-ঘুষি মেরে নদীর পাড়ে মাটিতে ফেলে দেন। এরপর কাজল জালের রশি দিয়ে রিফাতের হাত-পা বেঁধে ফেলেন।
খেয়াঘাটের অপর পাড়ে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মাঝি এমারত হোসেনকে ডেকে আনা হয়। কাজল ও সোহাগ মিলে রিফাতকে টেনে-হিঁচড়ে নৌকায় তোলেন। নৌকা মাঝনদীতে নিয়ে রিফাতকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ফেলে দেওয়া হয়।
র্যাবের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, পানিতে ফেলে মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা সেখান থেকে দ্রুত ঘাটে চলে আসেন। স্থানীয় পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার ভয়ে রিফাতের রেখে যাওয়া মোটরসাইকেল রেখে হেঁটে কিছুদূর এসে ইজিবাইকে করে যে যার বাড়িতে চলে যান। রিফাতের পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করলে কাজলসহ তিনজনই আত্মগোপনে চলে যান।
তিনি আরও বলেন, কাজলের বিরুদ্ধে গাজীপুর আদালত ও বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে, যেগুলো বিচারাধীন ও তদন্তাধীন।পাওনা টাকার জেরে হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে বন্ধুকে হত্যা
নিজস্ব প্রতিবেদক ।
পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে বন্ধুকে হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে হত্যার অভিযোগে মূল পরিকল্পনাকারীসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গ্রেফতাররা হলেন- মূল পরিকল্পনাকারী ও প্রধান আসামি তাইজুল ইসলাম ওরফে কাজল (৩২) ও তার সহযোগী এমারত হোসেন (৩৮)।
সোমবার (১২ জুন) দুপুরে রাজধানীর উত্তরায় র্যাব-১ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুহাম্মদ মোসতাক আহমদ এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, রাইড শেয়ারিং সার্ভিস পাঠাও চালক রিফাত ও কাজল পূর্ব পরিচিত এবং তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সর্ম্পক ছিল। তবে মাসখানেক আগে ব্যবসায়িক দেনা-পাওনা নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। রিফাত পাওনা টাকা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানান। এতে ক্ষিপ্ত হন কাজল। ক্ষোভ থেকেই রিফাতকে হত্যার পরিকল্পনা করেন কাজল।
পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৫ জুন তুরাগ নদীতে রিফাতকে নিয়ে ঘুরতে যান কাজল। সেখান থেকে রাতে ফেরার আগে তর্ক-বিতর্কের মধ্যে রিফাতকে মারধর করা হয়। এরপর মাঝির সহযোগিতায় রিফাতকে হাত-পা বেঁধে তুরাগ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
গত ৬ জুন বিকেলে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার রোদ্রপুর এলাকায় তুরাগ নদীতে একটি মরদেহ ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে পরিবার সূত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিশ্চিত হয় মরদেহটি রিফাতের।
ওই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী কাজলসহ দুজনকে গ্রেফতারের পর র্যাব-১ জানিয়েছে, পাঠাওচালক রিফাতকে বাসা থেকে ডেকে গুম করার উদ্দেশ্যে তুরাগ নদীতে ডুবিয়ে হত্যা করা হয়। এর মূল পরিকল্পনাকারী কাজল।
র্যাব কর্মকর্তা মুহাম্মদ মোসতাক আহমদ বলেন, মরদেহ উদ্ধারের পর ভুক্তভোগী পরিবার মুখমণ্ডল ও পরিধেয় বস্ত্র দেখে মরদেহটি শরীফ হোসেন রিফাতের (২০) বলে শনাক্ত করে। ওই ঘটনায় রিফাতের বাবা মো. ফারুক বাদী হয়ে জিএমপির গাছা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য উন্মোচনের জন্য র্যাব-১ ছায়া তদন্ত শুরু করে।
রোববার (১১ জুন) রাতে র্যাব-১ এর একটি দল ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কাজলকে গ্রেফতার করে। কাজল টঙ্গী পূর্ব থানার আব্দুর রশিদের ছেলে।
কাজলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই রাতে রিফাত হত্যায় সহযোগী নৌকার মাঝি এমারত হোসেনকে গাজীপুরের গাছা থানার পলাশোনা খেয়াঘাট এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার কাজলকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র্যাব-১ অধিনায়ক বলেন, রিফাত ও কাজল পূর্ব পরিচিত এবং তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সর্ম্পক ছিল। আনুমানিক এক মাস আগে থেকে তাদের মধ্যে ব্যবসায়িক দেনা-পাওনা নিয়ে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। রিফাতের পরিবারের বক্তব্য, কাজল ২০ হাজার টাকা পেতেন। আর কাজলের দাবি পাওনা টাকার পরিমাণ ২৭ হাজার। রিফাত পাওনা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে কাজল ক্ষিপ্ত হন। রিফাতকে শায়েস্তা করতে হত্যার পরিকল্পনা করেন কাজল।
পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৫ জুন বিকেল ৫টার দিকে কাজল তার সহযোগী সোহাগের সহায়তায় রিফাতকে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে বাসা থেকে ডেকে এনে তুরাগ নদী পার হয়ে তারা সাতাশকান্দি চরে যান।
পরিকল্পনা অনুযায়ী সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে অপেক্ষা করেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে তারা নদীর অপর পাশ থেকে বাসায় যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হন। এসময় ব্যবসায়িক লেনদেনের কথা তুলে তর্ক-বিতর্কে জড়ান কাজল। একপর্যায়ে কাজল ও সোহাগ মিলে রিফাতকে কিল-ঘুষি মেরে নদীর পাড়ে মাটিতে ফেলে দেন। এরপর কাজল জালের রশি দিয়ে রিফাতের হাত-পা বেঁধে ফেলেন।
খেয়াঘাটের অপর পাড়ে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মাঝি এমারত হোসেনকে ডেকে আনা হয়। কাজল ও সোহাগ মিলে রিফাতকে টেনে-হিঁচড়ে নৌকায় তোলেন। নৌকা মাঝনদীতে নিয়ে রিফাতকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ফেলে দেওয়া হয়।
র্যাবের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, পানিতে ফেলে মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা সেখান থেকে দ্রুত ঘাটে চলে আসেন। স্থানীয় পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার ভয়ে রিফাতের রেখে যাওয়া মোটরসাইকেল রেখে হেঁটে কিছুদূর এসে ইজিবাইকে করে যে যার বাড়িতে চলে যান। রিফাতের পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করলে কাজলসহ তিনজনই আত্মগোপনে চলে যান।
তিনি আরও বলেন, কাজলের বিরুদ্ধে গাজীপুর আদালত ও বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে, যেগুলো বিচারাধীন ও তদন্তাধীন।