পাবনার সেই বালুমহালের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গুলি বিনিময়, অস্ত্রসহ আটক ১০
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
পাবনা প্রতিনিধি:
পাবনা সদর উপজেলার ভাঁড়ারায় পদ্মা নদীতে বালু উত্তোলনের কর্মযজ্ঞ চলছেই। আলোচিত এই বালুমহালের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। এতে গুলিবিদ্ধসহ ১০ আহত হয়েছেন। পরে তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে অপরপক্ষ। পুলিশ অস্ত্রসহ তাদের আটক করেছে। এ নিয়ে পাবনা ও কুষ্টিয়ার বালু খেকোদের মধ্যে উত্তেজনা চলছে।
রোববার বিকেলে ভাড়ারা ইউনিয়নের চরকণ্ঠগজরা এলাকার পদ্মা নদী থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটকরা হলেন- পাবনার সুজানগর উপজেলার চর সুজানগরের মৃত জলিল শেখের ছেলে আলতাফ শেখ (৩০), মজিদ শেখের ছেলে জয়নাল শেখ (২৮), আব্দুল বাতেনের ছেলে রিপন শেখ (২৬), বাদশা শেখের ছেলে মোস্তফা শেখ (২৮), চর ভবানীপুর এলাকার বাবুল শেখের ছেলে হৃদয় শেখ (২২), শহীদ শেখের ছেলে রাকিব শেখ (২৫), পাবনা সদর উপজেলার ভাড়ারার শ্রীপুর এলাকার আব্দুল জলিল শেখের ছেলে আবুল হাসেম (৩৬), চক ভাড়ারার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে ঈসমাইল হোসেন (৬০) এবং লবু জোয়াদ্দার শেখের ছেলে সুরুজ জোয়াদ্দার (৩৬)। এর মধ্যে রাকিব গুলিবিদ্ধ এবং সুরুজ জোয়াদ্দার গত ৪ আগস্ট পাবনা শহরে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার মামলার আসামি।
তবে বালুমহালের সঙ্গে সংযুক্ত একাধিক সূত্র জানায়, দেশের প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেই বালু উত্তোলনের মহাকর্মযজ্ঞ চলছিল। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে পাবনা, রাজবাড়ী ও কুষ্টিয়ার প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এই মহোৎসব চলছিল। কিন্তু গত ৭ ও ৮ সেপ্টেম্বরে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর কয়েকদিন বন্ধ ছিল। কিন্তু আবারও কুষ্টিয়ার কুমারখালীর আব্দুল আলিম, নয়ন, তোফাজ্জল, বকুলের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট বালু উত্তোলন শুরু করে। এবার পাবনা ও রাজবাড়ীর অংশের সবাইকে বাদ দেওয়া হয়। এ নিয়ে চলছিল উত্তেজনা। আজকে পার্শ্ববর্তী রাজবাড়ী জেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খানের হয়ে সুরুজ ও ঈসমাইলের নেতৃত্বে বালু মহলের নিয়ন্ত্রণ নিতে যান তারা। এসময় দুই গ্রুপের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়। একপর্যায়ে পাবনা থেকে যাওয়া ১০ জনকে বেধরক পিটিয়ে বেধে রেখে পাবনা সদর থানার পুলিশকে খবর দেয়।
এ বিষয়ে বাহাদুরপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান বলেন, আমার পার্শ্ববর্তী এলাকা হলেও কিছু জানি না। আমি তাদেরকে চিনিই না, তারা পাবনার লোক। আমি নিজেই বালু উত্তোলনের বিপক্ষে। আমরা মানুষের জমিজমা রক্ষা করতে এবং বালু উত্তোলন বন্ধ করতে জেলা প্রশাসকদের কাছে আবেদন করেছি।
কুষ্টিয়া-৪ আসনের সাবেক এমপি সেলিম আলতাফ জর্জে সহযোগী আব্দুল আলিমের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় এ বিষয়ে মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
পাবনা সদর থানার ইন্সপেক্টর (ওসি-অপারেশন) আব্দুস সালাম বলেন, খবর পেয়ে আমরা সেখান গিয়ে আহতবস্থায় ১০ জনকে আটক করেছি। ভাঙাচোড়া দুইটি অস্ত্র উদ্ধার করেছি। তাদের মধ্যে ৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত বলা যাবে।
পাবনার নাজিরগঞ্জ নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইদুর রহমান, আমরা বালুমহালের ১৪ জনকে সাজা দিয়েছে। তারপরও কারা তুলছে জানি না। আজকে তো আমরা কিছু পাইনি। আমরা যদি বালুমাহলের সঙ্গে জড়িত থাকতাম তাহলে ১৪ জনকে সাজা দিয়েছি কিভাবে? এখন বালু উত্তোলন হয় না।