পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীদের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:
পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক অবরোধ করেছেন কোটাবিরোধী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এতে করে এ সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুর সোয়া ১টার দিকে মহাসড়কের আশেকপুর বাইপাস এলাকায় তারা অবরোধ করেন।
এ সময় ‘তুমি কে, আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ স্লোগানসহ বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে কোটা বাতিলের দাবি জানান তারা। বর্তমানে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এর আগে, দুপুরে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছালে পুলিশ বাধা সৃষ্টি করে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে মিছিল নিয়ে মহাসড়কে অবস্থান নেয়।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে জেলা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী টাঙ্গাইল নিরালা মোড়ে অবস্থান নেন। এ সময় কোটাবিরোধী কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে নিরালা মোড়ের দিকে যাওয়ার সময় হামলা ও ধাওয়া করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে নেতৃত্ব দেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান।
এ সময় ছাত্রলীগের হামলায় ৩ শিক্ষার্থী আহত হয়। পরে সাধারণ শিক্ষার্থীর একটি গ্রুপ একত্রিত হয় টাঙ্গাইল পৌর উদ্যানে। সেখান থেকে তারা টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। পরে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও এম এম আলী সরকারি কলেজের কয়েকশ শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে শহরে প্রবেশ করে। এই ঘটনায় শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
এদিকে, কোটাবিরোধী কয়েকশ শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে শহরে প্রবেশ করছে এমন খবরে নিরালা মোড়ে অবস্থান করা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভয়ে সেখান থেকে চলে যায়। পরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের আশিকপুর বাইপাসে গিয়ে জড়ো হয়।
অপরদিকে, শহরের বিভিন্নস্থানে বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। যেকোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে তৎপর রয়েছে তারা।
শিক্ষার্থীরা জানান, শান্তিপূর্ণ কোটাবিরোধী কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় তিন জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় একজনকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান বলেন, শহরে যাতে কোনও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি না হয় এজন্য নিরালা মোড়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে ছাত্রলীগ। এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে, আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ স্লোগান দিলে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করা হয়। তবে কারও ওপর হামলা করা হয়নি। পরে বেলা ১২টার দিকে স্থান ত্যাগ করা হয়।’
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম সবুর বলেন, ‘বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা কোটাবিরোধী আন্দোলন করছে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও অবস্থান নিয়েছিল। তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে কোনও সমস্যা নেই। তবে জনগণের ক্ষতির কারণ বা আইনশৃঙ্খলার অবনতি, ভাঙচুর-বিশৃঙ্খলা করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’