পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা করে প্রজ্ঞাপন জারি

প্রকাশিত: ১০:৫০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১২, ২০২৩

সেলিনা আক্তার:

দেশের তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের জন্য গত ৭ নভেম্বর ন্যূনতম মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা ঘোষণা করা হয়েছিল। এর ঠিক পাঁচ দিনের মাথায় আজ রোববার (১২ নভেম্বর) খসড়া গেজেট প্রকাশ করল সরকার। এতে সর্বনিম্ন মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা রাখার পাশাপাশি কর্মচারী শ্রেণিতে সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ৮০০ টাকা মজুরি কাঠামো উল্লেখ করা হয়েছে। একইভাবে অন্যান্য গ্রেডেও মজুরি কত হবে সেটিও উল্লেখ রয়েছে খসড়া গেজেটে। নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী মোল্লা স্বাক্ষরিত এ খসড়া গেজেটে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

গেজেটে বলা হয়েছে, এ মজুরি হারের ওপর কারো কোনো সুপারিশ বা আপত্তি থাকলে আগামী ১৪ দিনের মধ্যে নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিতভাবে জানাতে হবে। এই সময়সীমার মধ্যে পাওয়া আপত্তি বা সুপারিশ বিবেচনার পর বোর্ড সরকারের কাছে সুপারিশ করবে। এর আগে মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ হয়। ৭ নভেম্বর বিকেলে সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ মজুরির ঘোষণা দেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান। এ সময় তাদের জন্য বছরে ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট থাকবে বলে জানিয়েছিলেন প্রতিমন্ত্রী।

গেজেটে বলা হয়েছে, ন্যূনতম মজুরি সমন্বয় করে এক বছর কর্মরত থাকার পর শ্রমিক-কর্মচারীরা মূল মজুরির ৫ শতাংশ হারে বার্ষিক ভিত্তিতে মজুরি বৃদ্ধি পাবে। পরবর্তী বছরে ক্রমবর্ধমান হারে পুনরায় মূল মজুরির ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাবে। সোয়েটারসহ অন্যান্য গার্মেন্টস শিল্প সেক্টরে ফুরন ভিত্তিক মজুরিতে কর্মরত শ্রমিকরাও বার্ষিক ভিত্তিতে মূল মজুরির ৫ শতাংশ হারে মজুরি বৃদ্ধির সুবিধা পাবেন।

শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মঘণ্টা বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এবং বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা ২০১৫-এর সংশ্লিষ্ট ধারা ও বিধি অনুযায়ী নির্ধারিত হবে। শ্রমিক-কর্মচারীরা বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এবং বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা ২০১৫-এর সংশ্লিষ্ট ধারা ও বিধি অনুযায়ী ভাতাদি এবং অন্যান্য সুবিধা পাবেন।

গেজেটের তথ্য অনুযায়ী, গ্রেড-১-এর শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি হবে ১৪ হাজার ৭৫০ টাকা। এর মধ্যে মূল মজুরি আট হাজার ২০০ টাকা, বাড়ি ভাড়া চার হাজার ১০০ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৭৫০ টাকা, যাতায়াত ভাতা ৪৫০ টাকা এবং খাদ্য ভাতা এক হাজার ২৫০ টাকা।

গ্রেড-২-এর শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি হবে ১৪ হাজার ১৫০ টাকা।

এর মধ্যে মূল মজুরি সাত হাজার ৮০০ টাকা, বাড়ি ভাড়া তিন হাজার ৯০০ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৭৫০ টাকা, যাতায়াত ভাতা ৪৫০ টাকা এবং খাদ্য ভাতা এক হাজার ২৫০ টাকা।
গ্রেড-৩-এর শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি হবে ১৩ হাজার ৫৫০ টাকা। এর মধ্যে মূল মজুরি সাত হাজার ৪০০ টাকা, বাড়ি ভাড়া তিন হাজার ৭০০ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৭৫০ টাকা, যাতায়াত ভাতা ৪৫০ টাকা এবং খাদ্য ভাতা এক হাজার ২৫০ টাকা।

গ্রেড-৪-এর শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি হবে ১৩ হাজার ২৫ টাকা। এর মধ্যে মূল মজুরি সাত হাজার ৫০ টাকা, বাড়ি ভাড়া তিন হাজার ৫২৫ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৭৫০ টাকা, যাতায়াত ভাতা ৪৫০ টাকা এবং খাদ্য ভাতা এক হাজার ২৫০ টাকা।

একইভাবে গ্রেড-৫-এর শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি হবে ১২ হাজার ৫০০ টাকা। এর মধ্যে মূল মজুরি ছয় হাজার ৭০০ টাকা, বাড়ি ভাড়া তিন হাজার ৩৫০ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৭৫০ টাকা, যাতায়াত ভাতা ৪৫০ টাকা এবং খাদ্য ভাতা এক হাজার ২৫০ টাকা।

এ ছাড়া শিক্ষানবিশ শ্রমিকের মজুরি কাঠামোর বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে―শিক্ষানবিশকাল হবে তিন মাসের। এই তিন মাস শিক্ষানবিশ শ্রমিক সাকল্যে বেতন পাবে ৯ হাজার ৮৭৫ টাকা। এর মধ্যে মূল মজুরি হবে চার হাজার ৯৫০ টাকা, ৫০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া হিসেবে দুই হাজার ৪৭৫ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৭৫০ টাকা, যাতায়াত ভাতা ৪৫০ টাকা এবং খাদ্য ভাতা হিসেবে পাবেন এক হাজার ২৫০ টাকা।

খসড়া গেজেটে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, গার্মেন্টস খাতে কর্মরত কর্মচারী শ্রেণিদের মধ্যে গ্রেড-১-এর স্টোর কিপারসহ অন্যরা পাবেন সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ৮৮০ টাকা। তাদের মূল বেতন হবে ১০ হাজার ৯০০ টাকা, বাড়ি ভাড়া পাঁচ হাজার ৪৫০ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৭৫০ টাকা, যাতায়াত ভাতা ৪৫০ টাকা এবং খাদ্য ভাতা পাবেন এক হাজার ২৫০ টাকা।