প্রচণ্ড শীতে কাবু হয়ে পড়েছে নীলফামারীর জনজীবন

প্রকাশিত: ১১:৪০ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ১৪, ২০২৪

নীলফামারী প্রতিনিধিঃ 

রাভভর বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা। দিনব্যাপী কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে সড়ক ও মাঠঘাট। সেই সঙ্গে বইছে হিমেল হাওয়া। এক সপ্তাহ ধরে উত্তরের জেলা নীলফামারীর এমন অবস্থা। প্রচণ্ড শীতে কাবু হয়ে পড়েছে জনজীবন। কুয়াশার ঘনত্ব এতটাই বেশি যে দৃষ্টিসীমা কমে যাওয়ায় রেলপথ ও সড়ক পথে হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে যানবাহন চলাচল করছে। আকাশপথেও বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটেছে।

রোববার (১৪ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায়ও সূর্যের দেখা মেলেনি জেলার কোথাও। এদিন নীলফামারীর সৈয়দপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, উত্তরের হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশার কারণে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এদিকে রাত ও দিনে তাপমাত্রা প্রায় কাছাকাছি হওয়ায় দিনের চেয়ে রাতে অনেক বেশি ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। ভোর আর সন্ধ্যায় গ্রামে গ্রামে জটলা বেঁধে আগুন পোহানোর মাধ্যমে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে অনেকেই। শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুনের উষ্ণতা নিতে গিয়ে কোথাও কোথাও ঘটছে অগ্নিদগ্ধের ঘটনাও। সন্ধ্যার পরে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না সাধারণ মানুষ। প্রচণ্ড শীতে কাজে বের হতে গিয়ে বেকায়দায় পড়ছেন শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা। ঠান্ডা বাতাসে ঘরে থাকা দায় হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলের মানুষদের। ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডায় নষ্ট হচ্ছে ধানের বীজতলা ও আলুখেত। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। ঠান্ডায় কষ্ট পাচ্ছে গরু-ছাগল।

জেলা শহরের বাজার ট্রাফিক মোড়ে রিকশা নিয়ে গুটিসুটি হয়ে বসে থাকা আজিজুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে ঠান্ডায় যাত্রী ঠিকমতো পাই না। শহর ফাঁকা, লোকজন নেই। রিকশা জমার টাকা কামাই হয় না। পরিবারে ছয়জনের জন্য প্রতিদিন ৩০০ টাকার বাজার লাগে। এই ঠান্ডা বাতাস কাল হয়ে দাঁড়াইছে। এভাবে জীবন চলে না।

ডোমার উপজেলার বড়রাউতা এলাকার রাকিবুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, কুয়াশা আর ঠান্ডায় বাড়ির সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েছি। গরু-ছাগলের অবস্থা খারাপ। খুব কষ্টে দিন পার করছি। এই ঠান্ডায় ঘর থেকে বের হওয়া বড় দায়।

নীলফামারীর জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ ঢাকা পোস্টকে বলেন, শীত মোকাবিলায় পর্যাপ্ত সরকারি সহায়তা প্রস্তুত রয়েছে। শীতবস্ত্র হিসেবে জেলার ৬ উপজেলা ও চার পৌরসভায় তিন দফায় ৩৬ হাজার ৮৮০টি কম্বল পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শীতার্ত মানুষদের কথা চিন্তা করে আরও শীতবস্ত্রের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। আশা করি দ্রুত শীতবস্ত্র পাওয়া যাবে। তা পেলেই শিগগির বিতরণের ব্যবস্থা করা হবে।