ফরিদপুরে ঋণ দেওয়ার প্রলোভনে টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও

প্রকাশিত: ১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৬, ২০২৪

ফরিদপুর প্রতিনিধি:

মাত্র ১০ হাজার টাকা জমা দিলেই সহজ শর্তে ঋণ পাবেন এক লক্ষ টাকা আর সেই ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন দুই বছরে। এমন নানা স্কিমের প্রলোভন দেখিয়ে কয়েক শত মানুষের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে গেছে প্রত্যাশা সমাজ কল্যাণ সংস্থা নামে একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও)। বৃহস্পতিবার ঋণ দেওয়ার কথা থাকলেও মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে তাদেরকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান ভুক্তভোগীরা।

অভিযুক্তরা হলেন, সংস্থার চেয়ারম্যান মোঃ বাবুল আকতার, ম্যানেজার মোঃ আরিফুল ইসলাম, সিনিয়র মাঠ কর্মী ফেরদৌস আরাসহ প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য কর্মচারী এই প্রতারনার সাথে জড়িত বলে অভিযোগ করা হয়। অফিসের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা হিসাবে পরিচয় দেয়া ব্যক্তিরা আত্মগোপনে চলে গেলেও ওই সংস্থার দুই কর্মীকে আটকে রাখেন গ্রাহকরা। খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতেই তাদের উদ্ধার করেন পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, মাত্র এক মাস আগে ফরিদপুর শহরের ৯নং ওয়ার্ডের রঘুনন্দনপুরে ফরিদপুর হাউসিং স্টেটে ছায়াবীথি-মমতা ভবনে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বেসরকারি সংস্থার পরিচয়ে কার্যক্রম শুরু করে। ওই প্রতিষ্ঠানটির সাইনবোর্ডে রেজিস্ট্রেশন নম্বর ২৭৪/১৯৯৮ইং লেখা থাকলেও সেটি কোন প্রতিষ্ঠান থেকে নেয়া সে বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট উল্লেখ নেই। তারা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ১০০ টাকার বিনিময়ে সদস্য সংগ্রহ করেন।

তাদের প্রলোভনে পড়ে অনেকেই টাকা জমা দেন। গত এক মাস ধরে তারা হাভেলি গোপালপুর, গোয়ালচামচ, রঘুনন্দনপুর সহ বিভিন্ন স্থানে সমিতি গঠন করে ঋণ প্রদানের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন। বৃহস্পতিবার তাদের ঋণ দেবার কথা থাকলেও তার দুদিন আগে মঙ্গলবার দুপুরেই অফিস ফেলে পালিয়ে যায় তারা। ঋণ পাবার আশায় অনেকেই ধার দেনা করেও টাকা দিয়েছেন তাদের।
ভুক্তভোগী কামরুন্নাহার রোজি জানান, প্রতারকচক্র ঋন দেবার কথা বলে লোন দেবার কথা বলে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এদের মধ্যে আফরোজা বেগমের ৩০ জাজার ৬শ টাকা, নুরুন্নাহারের নিকট থেকে ২০ হাজার ৬শ টাকা, রুবিনা বেগম কে ৭ লাখ টাকা ঋন দেবার কথা বলে ৭০ হাজারসহ সমিতির অন্যান্য সদস্যদের কাছ থেকে বহু টাকা আত্মসাৎ করে এই চক্রটি।

আটকে রাখা দুই কর্মচারীর জানান, তারা ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের দ্বারা প্রতারিত হয়েছেন। নানা প্রলোভনে তাদেরকে চাকরি দিয়েও টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। তারা টাকা হাতিয়ে নেয়ার সাথে জড়িত নয় বলে দাবি করছেন।

এবিষয়ে মঙ্গলবার বিকেলে তিন জনের নাম উল্লেখসহ বেশকয়েক জনকে আসামী করে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করা হয়। কোতোয়ালি থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. আশরাফ জানান, এনজিও দুই কর্মচারী আটকে রাখার খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানা পুলিশ তাদের উদ্ধার করেন। উদ্ধারকৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা সহ ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তা।