‘ফাইনালের আগেই ফাইনাল’

প্রকাশিত: ২:৪৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ৪, ২০২৫

ক্রীড়া ডেস্ক:

 

শিরোপার হিসেবে ‘মিনি বিশ্বকাপ’ খ্যাত চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেরা দুই অস্ট্রেলিয়া এবং ভারত। দুই দলেরই রয়েছে দুইটি করে শিরোপা। এছাড়া বর্তমানে আইসিসির অন্যান্য ফরম্যাটের বৈশ্বিক টুর্নামেন্টেও এই দুই দেশ দাপট দেখিয়েই চলেছে। সেই ধারাবাহিকতায় সবশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতেছে অস্ট্রেলিয়া সেটিও ভারতের ঘরের মাটিতে তাদের হারিয়েই। আর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত।

চলমান চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও এই দুই দলকে ফেভারিট হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিলো, ধারণা করা হচ্ছিলো আসরের ফাইনালে মুখোমুখি হবে এই দুই দল। তবে ফাইনাল নয় ভারত-অস্ট্রেলিয়া মুখোমুখি হতে যাচ্ছে সেমিফাইনালেই। আজ দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আসরের প্রথম সেমিফাইনালে বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টায় মাঠে নামবে এই দুই দল। সমর্থকদের প্রত্যাশা ফাইনালের আগেই এই দুই দলের মুখোমুখি লড়াই তাদের স্বাদ দিবে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের। ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মাও এমনটি মনে করেন।

এই দুই দলের সবশেষ ওয়ানডে ছিল ২০২৩ বিশ্বকাপের ফাইনাল। যে ম্যাচে আহমেদাবাদে মাঠের লাখ খানেক দর্শক ও কোটি কোটি ভারতীয়কে স্তব্ধ করে শিরোপা জিতে নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। তবে ঐ দলে আর অজিদের বর্তমান দলে রয়েছে বিশাল তফাত। বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ককে ছাড়াই মিনি বিশ্বকাপ খেলতে নেমেছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। তার ওপর তাদের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে ছিটকে যাওয়া ক্রিকেটারের তালিকা ক্রমশ দীর্ঘ হয়ে চলেছে। চোটের
জন্য অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়নস ট্রফির স্কোয়াডে পায়নি প্যাট কামিন্স ও জোশ হ্যাজেলউডকে। ব্যক্তিগত কারণে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে নাম তুলেছেন মিচেল স্টার্ক। মিচেল মার্শকেও দলে পায়নি অস্ট্রেলিয়া।

ওয়ানডে থেকে অবসর নেওয়ায় চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলছেন না মার্কাস স্টোনিয়াস। এই তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে ম্যাথিউ শর্টের নাম। আফগানদের বিপক্ষে ম্যাচেই ইনিংসের শেষ দিকে উরুর চোটে পড়েন শর্ট। পরে যদিও ইনিংস ওপেন করেন তিনি। তবে সেমিফাইনালের আগেই তিনি ছিটকে গিয়েছেন স্কোয়াড থেকে। তার পরিবর্তে দলে যুক্ত করা হয়েছে তরুণ ব্যাটিং অলরাউন্ডার কুপার কনোলিকে। এখনো পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১টি টেস্ট, ৩টি ওয়ানডে ও ২টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। যদিও ম্যাচগুলোতে ব্যাটে-বলে বিশেষ কিছু করে দেখাতে পারেননি তিনি।

অন্যদিকে ভারত গ্রুপ পর্বে তিন জয় তুলে নেওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফাইনালের টিকিট কাটতেও বেশ আত্মবিশ্বাসী। গ্রুপ পর্বে তারা বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও সবশেষ উড়ন্ত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পেয়েছে। সেমিফাইনালের ম্যাচের আগে গতকাল ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা প্রতিপক্ষ নিয়ে বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া এমন ম্যাচে দুর্দান্ত প্রতিপক্ষ। আমাদের শেষ তিনটি ম্যাচে যে পরিকল্পনা করেছিলাম, তা-ই করতে হবে। আমাদের সেই ম্যাচে একইভাবে এগোতে হবে। আমরা প্রতিপক্ষকে জানি, তারা কেমন খেলবে। কিন্তু আমি মনে করি, যত বেশি আমরা নিজেদের দিকে মনোযোগ দেব-একটি দল হিসেবে, একজন খেলোয়াড় হিসেবে, ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে, বোলিং ইউনিট হিসেবে-তত বেশি আমাদের জন্য ভালো হবে। আমি আগেও বলেছি, অস্ট্রেলিয়া বছরের পর বছর ধরে একটি দুর্দান্ত দল হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করে আসছে। তাই আমরা প্রত্যাশা করছি যে তারা লড়াই করবে, কিছু স্নায়ুচাপের মুহূর্তও আসবে ম্যাচের মাঝে। তবে এভাবেই তো খেলা এগিয়ে চলে আজকাল। আর যখন আপনি সেমিফাইনালের কথা বলছেন, তখন অবশ্যই দুই দলের ওপরই চাপ থাকবে ম্যাচটি জিততে।’

এর আগে এই টুর্নামেন্টে ভারতের সঙ্গে ৪ বার দেখা হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার। পাল্লা ভারী ভারতের। প্রতিযোগিতার প্রথম দুই আসরে জয় পেয়েছিল ভারত, বিপরীতে ২০০৬ আসরে জয় আছে অজিদের। ২০০৯-এর ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়। ২০০২ আসরে বৃষ্টির কারণে রিজার্ভ ডেতেও ম্যাচ মাঠে না গড়ালে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। পরে ২০১৩ সালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে প্রতিযোগিতাটিতে দ্বিতীয়বার নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের দেখা পায় টিম ইন্ডিয়া। অন্যদিকে ২০০৬ ও ২০০৯ আসরে দুবার চ্যাম্পিয়ন হয় অস্ট্রেলিয়া।

এ দিকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি হাইব্রিড মডেলে হওয়ায় ভারতের সব ম্যাচ দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গ্রুপ পর্বের সব ম্যাচ তারা সেখানেই খেলেছে। স্বাভাবিকভাবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেমিফাইনালটিও তারা সেইখানে খেলবে। যদি রোহিত-কোহলিরা ফাইনাল নিশ্চিত করে তবে ফাইনাল ম্যাচটিও অনুষ্ঠিত হবে ঐ মাঠেই। তবে যদি অস্ট্রেলিয়া ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে তাহলে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে লাহোরে।