আন্তর্জাতিক ডেক্স:
লোহিত সাগর দিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্বের বৃহত্তম কন্টেইনার শিপিং কোম্পানি মায়ের্স্ক। শুক্রবার প্রতিষ্ঠানটি এক ঘোষণায় জানিয়েছে, লোহিত সাগর দিয়ে যাতায়াতকারী জাহাজগুলোতে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের হামলা চলতে থাকায় ওই জলসীমা এড়িয়ে চলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এক বিবৃতিতে ড্যানিশ কোম্পানিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, লোহিত সাগর ও এডেন সাগর এড়িয়ে এখন থেকে আফ্রিকা মহাদেশ ঘুরে তাদের জাহাজগুলো ভূমধ্যসাগরে পৌঁছাবে। কিন্তু লোহিত সাগর এড়িয়ে আফ্রিকা মহাদেশ ঘুরে আসার জন্য একটি জাহাজকে ১০ দিন অতিরিক্ত সময় ও বিপুল পরিমাণ অতিরিক্ত জ্বালানি ব্যয় করতে হয়। কোম্পানিটি বলছে, লোহিত সাগরের পরিস্থিতি ‘অতি উচ্চ মাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ’ থাকায় তারা এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে।
এই নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো লোহিত সাগর দিয়ে জাহাজ না চালানোর সিদ্ধান্ত নিল মায়ের্স্ক। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসনের প্রতিবাদে ইয়েমেনের হুথি সমর্থিত সেনাবাহিনী ইসরায়েলগামী জাহাজগুলোতে হামলা চালানোর পর নভেম্বর মাসে মায়ের্স্কসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি বড় শিপিং কোম্পানি লোহিত সাগর দিয়ে জাহাজ চলাচল বন্ধ রেখেছিল।কিন্তু গত মাসে মার্কিন নৌবাহিনী হুথিদের হামলা প্রতিহত করার জন্য লোহিত সাগরে একটি কথিত আন্তর্জাতিক টাস্ক ফোর্স গঠন করার ঘোষণা দেওয়ার পর ড্যানিশ কোম্পানিটি গত রোববার ওই টাস্ক ফোর্সের ছত্রছায়ায় জাহাজ চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
কিন্তু ওই টাস্ক ফোর্সের বহু রণতরী টহল দেওয়া সত্ত্বেও গত বুধবার ইসরায়েল অভিমুখী আরেকটি বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালায় ইয়েমেনের হুথি আনসারুল্লাহ আন্দোলন সমর্থিত সেনাবাহিনী। সিএমএ সিজিএম ট্যাগ নামক জাহাজটি ইয়েমেনের নৌবাহিনীর সতর্কতা কয়েক দফা উপেক্ষা করার পর এতে হামলা চালানো হয়।
ইয়েমেনের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারিয়ি গত বুধবার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ইহুদিবাদী ইসরায়েল অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ওপর আগ্রাসন বন্ধ না করা পর্যন্ত ইয়েমেনের সেনাবাহিনী লোহিত সাগর ও আরব সাগরে ইসরায়েলগামী জাহাজে হামলা চালিয়ে যাবে। তবে ইসরায়েলি মালিকানাধীন কিংবা ইসরায়েলগামী নয় এমন কোনো জাহাজের ক্ষতি ইয়েমেন করবে না।জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস বলেছেন, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা এখন বসবাসের অযোগ্য। শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, অক্টোবরে হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলার পর গাজা পুরোপুরি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল। গত তিন মাস ধরে গাজার বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় সাড়ে ২২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই নারী এবং শিশু।
আরও পড়ুন: লোহিত সাগরে হুথিদের জাহাজে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ১০
ইয়েমেনের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারিয়ি গত বুধবার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ইহুদিবাদী ইসরায়েল অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ওপর আগ্রাসন বন্ধ না করা পর্যন্ত ইয়েমেনের সেনাবাহিনী লোহিত সাগর ও আরব সাগরে ইসরায়েলগামী জাহাজে হামলা চালিয়ে যাবে। তবে ইসরায়েলি মালিকানাধীন কিংবা ইসরায়েলগামী নয় এমন কোনো জাহাজের ক্ষতি ইয়েমেন করবে না।