ফ্রান্সে ইসলামবিদ্বেষী হামলায় তরুণকে হত্যা : প্যারিসে প্রতিবাদ

প্রকাশিত: ৪:৫০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৮, ২০২৫

ডেস্ক রিপোর্ট:

ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলীয় লা গ্রঁ-কম্বে এলাকায় একটি মসজিদে মুসলিম তরুণ আবুবকরকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) এ হামলার ঘটনা ঘটে।

ওই হামলাকারী প্রায় ৫০ বার ছুরিকাঘাত করে আবুবকরকে হত্যা করেন। হামলার ঘটনার ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়, যা ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

২০ বছর বয়সী আবুবকর মালির নাগরিক। হামলার সময় তিনি নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদে ছিলেন। হামলাকারী ফরাসি নাগরিক ও বসনিয়ান বংশোদ্ভূত। তিনি এখনো পলাতক। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হামলাকারীকে ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এ হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করেছেন এবং বলেছেন, ‘ফ্রান্সে ধর্মীয় বিদ্বেষ এবং বর্ণবাদের কোনো স্থান নেই।’ ফ্রান্সের মুসলিম ও ইহুদি সংগঠনগুলো এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সব ধর্মাবলম্বীর প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছে।

ইসলামোফোবিয়া ও ধর্মীয় সহিষ্ণুতার প্রতি একাত্মতা জানানোর জন্য রোববার (২৭ এপ্রিল) প্যারিসের প্লেস দে লা রিপাবলিক চত্বরে এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ‘লা ফ্রান্স অ্যাঁসুমিস’ দলের নেতা জঁ-লুক মেলাঁশঁ। তিনি বলেন, ‘আমরা এসেছি আবুবকরের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাতে এবং এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে হতবাক ও আতঙ্কিত সব বিশ্বাসীর পাশে দাঁড়াতে।’

মেলাঁশঁ আরও বলেন, ‘আমাদের বার্তা স্পষ্ট সব বিশ্বাসীকে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে। বিদ্রোহীরা বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, উপাসনা ও বিবেকের স্বাধীনতার ওপর আঘাতকারী সব সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়বে। এখনই সময় নিজেদের সংগঠিত করার, ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠে প্রতিবাদ জানানোর এবং এ সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহণের।’

সমাবেশে উপস্থিত জনতা তার আহ্বানে সম্মতি জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।

এ হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে ফ্রান্সের বিভিন্ন স্তরে শোক ও প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিশেষত মুসলিম জনগণের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা ও ধর্মীয় সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ আরও বেড়েছে।

এদিকে, ফরাসি প্রশাসন ধর্মীয় সহিষ্ণুতা ও মানবাধিকার রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য চাপের মধ্যে রয়েছে।

এ ঘটনার ফলে ফ্রান্সে ধর্মীয় বিদ্বেষ ও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আরও তীব্র হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। বিশেষত যখন এটি ফ্রান্সের বহু সাংস্কৃতিক সমাজের মধ্যে এক গভীর সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।