বগুড়ায় মুরগিতে স্বস্তি ডিমে অস্বস্তি

প্রকাশিত: ১১:৫৫ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ৭, ২০২৪

বগুড়া প্রতিনিধি:

খুচরা পর্যায়ে ডিম, সোনালি ও ব্রয়লার মুরগির দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। কিন্তু বগুড়ার বাজারগুলোতে নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ডিম। তবে মুরগি বিক্রি হচ্ছে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে।

রোববার (৬ অক্টোবর) বগুড়ার রাজাবাজার, ফতেহ আলী বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা পর্যায়ে এক পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩ টাকা ও এক হালি ৫২ টাকা। অথচ সরকার খুচরা পর্যায়ে প্রতি পিস ডিম ১১ টাকা ৮৭ পয়সা বেঁধে দিয়েছে।
এদিকে সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ২৭০ টাকা এবং ব্রয়লার প্রতি কেজি ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ডিম কিনতে আসা রুবেল বলেন, সরকার ডিমের দাম ১১ টাকা ৮৭ পয়সা নির্ধারণ করেছে। কিন্তু আমাদের কিনতে হচ্ছে ১৩ টাকায়। বাজারে কোনো তদারকি করার মানুষ নেই। শুধু দাম বেঁধে দিলে হবে না, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করতে হবে।

ফতেহ আলী বাজারের ডিম ব্যবসায়ী রাফিউল ইসলাম বলেন, ডিম কিনতেই আমাদের প্রতি পিস খরচ হচ্ছে ১২ টাকার ওপরে। এর মধ্যে আবার কিছু ডিম ভেঙে যায়, নষ্ট হয়। এখন আমরা বিক্রি করছি ১৩ টাকা পিস। আমরা কম টাকায় কিনতে না পারলে কীভাবে সরকারি দামে বিক্রি করবো? ডিম বিক্রি করে আমাদের খুব একটা লাভ হয় না। এখন এক হালি বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকায়।

ডিম ব্যবসায়ী রতন মন্ডল বলেন, কাজী ফার্ম আগে ৫ লাখ করে ডিম আনতো, এখন মাত্র এক দেড় লাখ ডিম দেয়। অন্যান্য জেলাতে ডিমের গাড়ি বেশি যায়। কিন্তু বগুড়ায় তুলনামূলকভাবে কম ডিমের গাড়ি আসে। আগের মতোই এখনো সিন্ডিকেট আছে। আগে সিন্ডিকেট কমাতে হবে। তাহলে জিনিসের দাম কমবে।
ডিমের বেশি দামের ব্যাপারে জানতে চাইলে বগুড়া সাবগ্রামের পোল্ট্রির স্বত্বাধিকারী এনামুল হক বলেন, যারা বলছে ডিমের দাম বেড়েছে সিন্ডিকেটের কারণে, এটি তাদের ভুল ধারণা। কাঁচামালের কোনো সিন্ডিকেট হয় না। ডিম-মুরগিতে আরও সম্ভব না। কারণ বড় কোম্পানি ছাড়া কারো পক্ষে ডিম স্টক করে দাম বাড়ানো সম্ভব না। মুরগির খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় ডিমের দাম বেশি।
বগুড়া কাজী ফার্মের আঞ্চলিক বিক্রয় ম্যানেজার মহিব্বুল ইসলাম হিরণ বলেন, প্রতিদিন আমাদের এখানে যে পরিমাণ ডিমের গাড়ি আসে সেভাবেই আমরা বিক্রি করে থাকি। সরকার নির্ধারিত মূল্যে ১১ টাকা ১ পয়সা দরে ডিলারদের ডিম দিচ্ছি। তারা যদি বেশি দামে বিক্রি করে তার দায়ভার আমরা নিতে পারি না। বগুড়ার নন্দীগ্রামের নিজস্ব ফার্ম থেকে ডিম আসে। এক মাস আগে প্রতিদিন চার থেকে সাড়ে চার লাখ ডিম উৎপাদন হতো। এখন প্রতিদিন ২ লাখ ৫ হাজার ২০০ পিস ডিম উৎপাদন হচ্ছে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বগুড়ার সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, আমরা ডিমের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছি। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কয়েক দফা আমাদের মিটিং হয়েছে। বগুড়ায় যে পরিমাণ ডিম আসে তা নিয়ন্ত্রণ করে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। বাকি চাহিদা পূরণ হয় রাজশাহী এবং উত্তরবঙ্গ থেকে। কেউ যদি কৃত্রিম সংকট তৈরি করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দ্রুত ডিমের মূল্যসহ বাজারের অস্থিরতা ঠিক হয়ে যাবে।