বরগুনায় কিশোরী গণধর্ষণে জড়িত দুই আসামি ঢাকায় গ্রেপ্তার
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
মোঃ সাইফুল ইসলামঃ
বরগুনা জেলার সদর এলাকায় চাঞ্চল্যকর ১৫ বছরের কিশোরীকে গণধর্ষণ মামলার পলাতক প্রধান আসামি খলিল ও বশিরকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।২৪ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযানে রাজধানীর ডেমরা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাব-১০ ও র্যাব-৮ এর যৌথ দল।
বুধবার (৮ মে) র্যাব-১০ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সহকারী পুলিশ সুপার এম. জে. সোহেল জানান, বরগুনা সদর এলাকায় বসবাসকারী বুদ্ধি প্রতিবন্ধী দম্পতি বরগুনা সদরসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। তাদের সংসারে ১৫ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বুদ্ধি প্রতিবন্ধী দম্পতি প্রায়ই তাদের মেয়ে ভিকটিমকে (১৫) বাসায় রেখে ভিক্ষাবৃত্তি করার জন্য বেরিয়ে যেতেন।একই এলাকায় বসবাসকারী মো. খলিল (৩৮), মো. বশির (৩৫), মো. কামাল (৪০), মো. দুলাল (৪২) ও আকলিমা বেগম (৩৩) তাদের প্রতিবেশী হওয়ায় তাদের সঙ্গে ভিকটিমের পরিবারের সুসম্পর্ক ছিল।
প্রতিদিনের মতো গত ১০ ফেব্রুয়ারি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী দম্পতি তাদের মেয়ে ভিকটিমকে বাসায় রেখে ভিক্ষাবৃত্তি করার জন্য বাসা থেকে বের হন। পরে খলিলের স্ত্রী ভুক্তভোগীকে ডেকেছে বলে খলিল তার বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে খলিল ভুক্তভোগীকে বিভিন্ন প্রলোভন ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে একই দিনে দুই বার ধর্ষণ করে। ঘটনাটি কাউকে জানালে প্রাণনাশের হুমকিসহ বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে, যার ফলে ভুক্তভোগী ভয়ে ঘটনাটি কাউকে জানায়নি।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগীকে অপর প্রতিবেশী দুলাল তার স্ত্রীকে মাটির চুলা সরাতে সাহায্য করার জন্য বাসায় ডেকে নিয়ে যায়। ভুক্তভোগী দুলালের বাসায় গিয়ে দেখে দুলারের স্ত্রী বাসায় নেই। পরে দুলাল ভুক্তভোগীর মুখ চেপে ধরে তাকে বাসার ভেতরে নিয়ে যায়। বাসার ভেতরে আগে থেকে বশির ও কামাল উপস্থিত ছিল। ভুক্তভোগীকে দুলাল, বশির ও কামাল পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে জানাজানি যাতে না হয়, সেজন্য প্রাণনাশের হুমকিসহ বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতি দেখায় তারা।
পরে ভুক্তভোগীর দৈহিক পরিবর্তন দেখা দিলে পাশের মা ও শিশু ক্লিনিকে নেওয়া হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ভিকটিম অন্তঃসত্ত্বা বলে জানান। পরিবারের লোকজন জানতে চাইলে ধর্ষণের ঘটনা সম্পর্কে পরিবারকে জানায় ভুক্তভোগী কিশোরী।ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরীর দাদি বাদী হয়ে বরগুনা সদর থানায় খলিল, দুলাল, বশির, কামাল ও ধর্ষণে সহযোগিতা করায় খলিলের স্ত্রী আকলিমাসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে একটি গণধর্ষণ মামলা করেন। মামলার খবরে আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়।
অভিযোগ পাওয়ার পর র্যাব-১০ ও র্যাব-৮ এর একটি যৌথ দল চাঞ্চল্যকর কিশোরী গণধর্ষণের এ ঘটনায় জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। মঙ্গলবার (৭ মে) রাত থেকে আজ বুধবার (৮ মে) দুপুর ১টা পর্যন্ত র্যাব-১০ ও র্যাব-০৮ এর যৌথ দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর ডেমরা থানাধীন মোস্ত মাঝির মোড় ও একই থানাধীন ডেমরাঘাট এলাকায় একাধিক যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে মামলার দুই পলাতক আসামি খলিল ও বশিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।