নিজস্ব প্রতিনিধি:
আসন্ন ১২তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়ে তিন ঘণ্টা পরই বহিষ্কার হলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য খন্দকার আহসান হাবিব ও এ কে এম ফখরুল ইসলাম। বুধবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এই দুই নেতাকে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট খন্দকার আহসান হাবিব এবং বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এর আগে একই দিন (১৫নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর মালিবাগ এলাকার স্কাই সিটি হোটেল লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে সদ্য বহিষ্কৃত বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য খন্দকার আহসান হাবিব বিএনপির সাবেক নেতাদের নিয়ে গঠিত ‘স্বতন্ত্র গণতন্ত্র মঞ্চ’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে আসন্ন ১২তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া ঘোষণা দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সদ্য বহিষ্কৃত বিএনপি নির্বাহী কমিটির আরেক সদস্য ব্যারিস্টার এ কে এম ফখরুল ইসলাম।
লিখিত বক্তব্যে খন্দকার আহসান হাবিব বলেন, বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে নানা রকমের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও সংসদ নির্বাচন করার ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন এবং সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব উপেক্ষা করার কোনও উপায় নেই। বর্তমান সংবিধানের কাঠামোর মধ্যে ১২তম সংসদীয় নির্বাচন হতেই হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন বর্জন একটি দলের অধিকার হতে পারে না, তবে নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য আন্দোলনের ডাক দেওয়া অনৈতিক এবং সন্ত্রাসবাদকে উৎসাহিত করার শামিল। কারণ নির্বাচন প্রতিহত করতে যে শক্তির প্রয়োজন তাতে ধ্বংসাত্মক দিক ফুটে উঠে যেমন; মৃত্যু, সম্পত্তির ক্ষতিসাধন, শিক্ষার কার্যক্রম ব্যাহত করাসহ রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ক্ষতি ছাড়া কিছুই নাই।
১২তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা আমাদের সাংবিধানিক অধিকারের মধ্যে পড়ে মন্তব্য করে আহসান হাবিব বলেন, পরিস্থিতি যেরকম হোক না কেন নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য কোনও আন্দোলনের ডাক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অন্তরায়।
এসময় তিনি অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান। একই সঙ্গে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াসহ বিএনপির অনান্য নেতাদের মুক্তির দাবি করেন।
বিএনপি’র অন্যতম নেতা হয়েও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা সংগঠনটির শৃঙ্খলা ভঙ্গের কোনও বিষয় আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে সংবাদ সম্মেলনে আহসান হাবিব বলেন, বিএনপির গঠনতন্ত্রে এমন কোনও দিকনির্দেশনা আছে বলে আমার জানা নেই। নির্বাচনে অংশ নিলেও কোনও নিবন্ধিত দল বা জোটের সঙ্গে তারা অংশীদার হবেন না বলেও জানান তিনি।
বহিষ্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে কে এম ফখরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমি আমার এক বন্ধুর মাধ্যমে বহিষ্কারের সংবাদ পেয়েছি। তবে আমি এতে বিচলিত নই।
বহিষ্কারের বিষয়টি নির্বাচনে অংশগ্রহণে কোনও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, হয়তো কিছুটা সমস্যা হবে। কিন্তু আমরা আমাদের বক্তব্য সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট করেছি।
স্বতন্ত্র ভাবেই নির্বাচনে অংশ নেবেন জানিয়ে কে এম ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘স্বতন্ত্র গণতন্ত্র মঞ্চের’ প্রত্যেক সদস্য স্বতন্ত্রভাবেই নির্বাচনে অংশ নেবেন।
কতজন সদস্য রয়েছে এই বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, যতটুকু জেনেছি ১২৫ জন সদস্য রয়েছে। এই বিষয়ে আমার পূর্ণ ধারণা নেই।ি