বাংলাদেশ থেকে আবারও তৈরি পোশাক কিনবে বিখ্যাত মার্কিন কোম্পানি ওয়াল্ট ডিজনি। ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসের পর বাংলাদেশ থেকে পোশাক কেনা বন্ধ করে দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিষ্ঠান। নানা সূচকে দেশের পোশাক খাত ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করায় নতুন করে পণ্য কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই বিশ্বখ্যাত এই ব্র্যান্ড।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্ততকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পক্ষ থেকে শুক্রবার (২ জুলাই) এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান সার্বিক অগ্রগতি ও রূপান্তর, বিশেষ করে কর্মক্ষেত্রের সুরক্ষা, সামাজিক মান এবং পরিবেশগত টেকসই হওয়ার ক্ষেত্রে পোশাক শিল্পের অর্জনকে স্বীকৃতি দিয়ে ওয়াল্ট ডিজনির এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। বিজিএমইএর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তবে ওয়াল্ট ডিজনির তরফ থেকে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণার খবর জানা যায়নি।
বিজিএমইএ’র প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ওয়াল্ট ডিজনি ২০১৩ সালে বাংলাদেশে অগ্নিদূর্ঘটনা ও ভবন ধসের ঘটনার পর থেকে পণ্য ক্রয় বন্ধ করে দিয়েছিল। আন্তর্জাতিক শ্রম মান নিরীক্ষা বিবেচনায় নিয়ে সংস্থাটি তার অনুমোদিত সোর্সিং দেশগুলোর তালিকায় আবারও বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি বিবেচনা করেছে।
ফারুক হাসান বলেন, ওয়াল্ট ডিজনির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আমাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ওয়াল্ট ডিজনির ফিরে আসাটা আমাদের পোশাকশিল্পের জন্য সুখবর। কারণ, সম্প্রতি ভারত থেকে প্রচুর পোশাক আমদানি করত তারা। মিয়ানমারের সঙ্গেও ব্যবসা শুরু করেছিল। ফলে আশা করছি, আমাদের উদ্যোক্তারাও ওয়াল্ট ডিজনি থেকে শিগগিরই উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ক্রয়াদেশ পাবেন।’
বিজিএমইএর নেতারা জানান, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) বেটার ওয়ার্ক প্রোগ্রাম, পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ তদারকিতে নিয়োজিত নিরাপন ও আরএমজি সাসটেইনেবল কাউন্সিলের (আরএসসি) অধীন থাকা কারখানাগুলো ওয়াল্ট ডিজনির ক্রয়াদেশ পাবে।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় এক হাজারের বেশি পোশাকশ্রমিক নিহত হন। এ ঘটনার পর বাংলাদেশের পোশাক কারখানার মান নিয়ে দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনা হয়। বিদেশি অনেক সংগঠন বাংলাদেশি পোশাক বর্জনের ডাক দেয়। এ রকম একটা সময়েই ওয়াল্ট ডিজনি বাংলাদেশ থেকে পোশাক না কেনার সিদ্ধান্ত জানায়। পরে অবশ্য দেশি-বিদেশি উদ্যোগের কারণে বাংলাদেশ পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে ব্যাপক কাজ হয়। পুরোপুরি কাজ শেষ না হলেও বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডের কাজ করা কমপ্লায়েন্ট কারখানাগুলোর সংস্কারকাজ অনেকটাই সম্পন্ন হয়েছে।
২০১৩ সালের আগে বাংলাদেশ থেকে ওয়াল্ট ডিজনি বছরে ৫০ কোটি ডলার বা ৪ হাজার কোটি টাকার পোশাক কিনত।
১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত ওয়াল্ট ডিজনির বিক্রয়কেন্দ্র বর্তমানে তিন শতাধিক। প্রতিষ্ঠানটি নারী-পুরুষের পাশাপাশি বাচ্চাদের পোশাক বিক্রি করে। এ ছাড়া বাচ্চাদের খেলনাসহ নানা ধরনের পণ্যসামগ্রী বিক্রির জন্য জনপ্রিয় ডিজনি।