ডেস্ক রিপোর্ট :
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সপ্তাহ দুয়েক আগে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে সেখানেই রয়েছেন তিনি। আন্দোলনকারীদের ওপর দমনপীড়ন ও হত্যার অভিযোগে দেশে তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। সেগুলোর বিচারের স্বার্থে ভারত সরকারের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানানো হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন অন্তর্র্বতী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন।
গত বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অনেক মামলা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয় যদি সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে আমাদের তাদের (ভারতকে) অনুরোধ করতে হবে তাকে (শেখ হাসিনাকে) বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে। এটি ভারত সরকারের জন্য বিব্রতকর হবে। ভারত এটি জানে এবং আমি নিশ্চিত যে তারা এ বিষয়ে খেয়াল রাখবে।
এখন, বাংলাদেশ যদি সত্যি ভারত সরকারের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানায়, তাহলে কী করবে নয়াদিল্লি? তারা কি আদৌ সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ফেরত পাঠাবে? কী আছে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যকার প্রত্যর্পণ চুক্তিতে? এসব প্রশ্নই ঘুরে বেড়াচ্ছে সবার মনে।
কী আছে প্রত্যর্পণ চুক্তিতে
২০১৩ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তি সই হয়। এই চুক্তি দেশ দুটিকে প্রয়োজন অনুসারে দোষী সাব্যস্ত বা বিচারাধীন আসামি বিনিময় করতে অনুমতি দেয়।
২০১৬ সালে প্রত্যর্পণ চুক্তিতে একটি সংশোধনী যুক্ত করা হয়। এতে এক বছরের বেশি দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের বিনিময়ের সুযোগ দেওয়া হয়। তবে রাজনৈতিক বন্দি এবং আশ্রয়প্রার্থীদের ক্ষেত্রে এই নীতি প্রযোজ্য হবে না।
শেখ হাসিনার জন্য কি প্রযোজ্য
শেখ হাসিনাকে ফেরত আনার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানাতে হবে। কারণ, ভারতে প্রত্যর্পণ বিষয়ক কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ হলো এই মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ অনুরোধ করলে শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানো হবে কি না, সে বিষয়ে গত শুক্রবার (১৬ আগস্ট) প্রশ্ন করা হয়েছিল ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালের কাছে। সেসময় তিনি বেশ সতর্কতার সঙ্গে বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এটিকে ‘অনুমানমূলক প্রশ্ন’ উল্লেখ করে রণধীর বলেন, তিনি এ ধরনের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পক্ষপাতি নন। তার মতে, পরিস্থিতি এখনো পরিবর্তন হচ্ছে।