বাচ্চাদের চোখের দিকে তাকালে প্রতিদিন হাজারবার মরতে ইচ্ছা করে’
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
সাম্প্রতিক সময়ে গাজার দক্ষিণের শহর খান ইউনিসকে ঘিরে সবচেয়ে ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হচ্ছে। ইসরায়েল আক্রমণ জোরদার করার সাথে সাথে গাজার ফিলিস্তিনিরা ভবিষ্যত সম্পর্কে তাদের ভয়ের কথা জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে গৃহহীন পরিবারগুলো ওই অঞ্চলে টিকে থাকা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় নাসের হাসপাতাল এলাকা থেকে পালিয়েছে। খবর বিবিসি।
হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার জবাবে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ২৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। গাজার ২৩ লাখ লোকের অধিকাংশই গৃহহীন হয়ে গেছে। খাদ্য, পানীয় এবং ওষুধের জন্য প্রতিদিন লড়াই করছে তারা।
গাজার বাসিন্দা দুই সন্তানের বাবা মোহাম্মদ আল-খালদি বলেছেন, ‘আমি আমার বাড়ি, আমার দোকান এবং আমার আয়ের উৎস হারিয়েছি। আমি আমার সন্তানদের জীবন বাঁচানোর সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোও সরবরাহ করতে পারছি না।’
পণ্যের দাম দশগুণ বেড়েছে এবং বেশিরভাগ মৌলিক প্রয়োজনীয় জিনিস পাওয়া যাচ্ছে না উল্লেখ করে খালদি আরও বলেন, ‘বাচ্চাদের চোখের দিকে তাকালে প্রতিদিন হাজার বার মরতে ইচ্ছা করে। অনেক বেশি অসহায়ত্ব অনুভব করি। কারণ আমি তাদের খাবার দিতে পারি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের জন্য আমি ইসরায়েলি দখলদারিত্বকে দায়ী করি। তবে যা ঘটেছে তার জন্য হামাসকেও দায়মুক্ত মনে করি না। সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার হলো, আমরা প্রতি দুই বা তিন বছর পর পর একটি যুদ্ধে ফিরে যাই। যুদ্ধের আগে পরিস্থিতি কঠিন ছিল তবে এখন এটি একটি বিপর্যয় হয়ে উঠেছে।’
গাজা শহরের আরেক গৃহহীন ব্যক্তি নাজি মাহমুদ উত্তর গাজায় সংঘটিত একটি বড় ইসরায়েলি হামলার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন। নভেম্বরের শেষে সপ্তাহব্যাপী মানবিক যুদ্ধবিরতির সময় খান ইউনিসের উদ্দেশ্যে রওনা হন। মাহমুদ বলেন, ‘খান ইউনিসে যাদের সাথে আমি কথা বলেছি তাদের অধিকাংশই বলেছে যে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী শহরের কেন্দ্রের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। তারা উপরের চেয়ে বেশি মাটির নিচে কাজ করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যখন আমরা গাজা শহরে ছিলাম, বেশিরভাগ হামলা হয়েছিল আকাশ থেকে। তবে এখন আমরা অনুভব করি, ভূমিকম্পের মতো মাটি কাঁপছে। প্রায় প্রতি সন্ধ্যায়ই এর পুনরাবৃত্তি হয়। মনে হচ্ছে বোমা হামলাগুলো টানেলগুলোকে লক্ষ্য করে করা হচ্ছে।’
গাজা শহরের পশ্চিম অংশ থেকে গৃহহীন হওয়া এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহতে বসবাসরত নেভিন ইমাদেদিন নামের এক নারী বলেছেন, ‘দেখুন আমাদের কী হয়েছে? চোরেরা আমার বাড়ি, জামাকাপড়, আসবাবপত্র এমনকি সোলার প্যানেল পর্যন্ত চুরি করেছে। আমাদের কাছে কোন টাকা বা বাড়ি নেই। হামা- ইসরায়েল যুদ্ধ আমাদের জীবনকে ধ্বংস করেছে। আমরা চাই একটি দীর্ঘমেয়াদী রাজনৈতিক সমাধানের মাধ্যমে যুদ্ধের অবসান হোক। আমরা শান্তিপূর্ণ, যুদ্ধ নেই এমন রাষ্ট্র চাই।’