বাজার নিয়ন্ত্রণে মধ্যস্বত্বভোগীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স চায় সিপিডি
সেলিনা আক্তার:
বাজার নিয়ন্ত্রণে পণ্য সরবরাহ ও দামের কারসাজির পেছনে থাকা প্রভাবশালী খেলোয়াড়দের নজরদারির আওতায় আনার সুপারিশ করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি)। এসব খেলোয়াড় ও মধ্যস্বত্বভোগীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স চায় বেসরকারি এই গবেষণা সংস্থাটি।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
তিনি বলেন, অন্তর্র্বতী সরকারের নেয়া কোনো পদক্ষেপ এখনো জনজীবনে স্বস্তি আনতে পারেনি। পেঁয়াজ, আলু, বেগুন, সয়াবিন তেল ও চিনিসহ ১৪টি খাদ্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক উঠানামার জন্য মজুতদারি, কমিশন বাণিজ্য বড় প্রভাব রেখেছে। অন্তর্র্বতী সরকার অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সরবরাহের বিভিন্ন পর্যায়ে চাঁদাবাজি, মজুতদারিসহ অন্যান্য অনিয়ম বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
অন্তর্র্বতী সরকার খাদ্যপণ্য সরবরাহ পর্যায়ে সুশাসন ফিরিয়ে আনতে সাহসী ও জরুরি পদক্ষেপ না নিলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না জানিয়ে তিনি বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে পণ্য সরবরাহ ও দামের কারসাজির পেছনে থাকা প্রভাবশালী খেলোয়াড়দের নজরদারির আওতায় আনতে হবে। এসব প্রভাবশালী খেলোয়াড় ও মধ্যস্বত্বভোগীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখাতে হবে।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে খাদ্য ও খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি প্রায় ১০ শতাংশের কাছাকাছি রয়েছে জানিয়ে ফাহমিদা বলেন, মূল্যস্ফীতির হার বৃদ্ধির আরেকটি কারণ ২০২৪ সালে দেশের পূর্বাঞ্চলে সংগঠিত ভয়াবহ বন্যা।
গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে চিনির গড় দাম ছিল প্রতিকেজি ৪১ টাকা; বিশ্ববাজারে প্রতিকেজি ৫৩ টাকা; যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রতিকেজি ৯৭ টাকা। কিন্তু বাংলাদেশের বাজারে তা ছিল প্রতিকেজি ১২৬ টাকা।
এছাড়া ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববাজারে সয়াবিন তেলের গড় দাম ছিল প্রতি লিটারে ১২৮ টাকা, যেখানে বাংলাদেশের বাজারে সয়াবিন তেলের গড় দাম ছিল লিটারে ১৬৮ টাকা।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের অক্টোবর পর্যন্ত রাজস্ব আহরণে মাত্র ৩ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলেও জানান ফাহমিদা খাতুন। তিনি বলেন, আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ। এছাড়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট এডিপি বাস্তবায়নে হার ছিল ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ, যা বিগত ১০ অর্থবছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
করফাঁকি রোধ করা এবং করজাল সম্প্রসারণে নজর দিতে হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, গত চার বছরে ৪০ লাখ মানুষ বিদেশে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে গেছে, কিন্তু সে অনুপাতে রেমিট্যান্স আসছে না। কেন আসছে না, তা খতিয়ে দেখা উচিত। পাশাপাশি সরকারি ব্যয় সঠিকভাবে করতে হবে। যানবাহন ক্রয় ও বিদেশ ভ্রমণে খরচ কমাতে হবে।