সেলিনা আক্তারঃ
ব্যাংকিং ব্যবস্থায় সুদের হার পুরোপুরি বাজারভিত্তিক করতে স্মার্ট ফর্মুলা বাতিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্ক এবং ব্যাংকিং খাতে ঋণের চাহিদা ও ঋণযোগ্য অর্থ সরবরাহের ওপর ভিত্তি করে সুদহার নির্ধারণ করা হবে বলে গতকাল বুধবার এক প্রজ্ঞাপনে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ব্যাংক ঋণের সুদহার সম্পূর্ণ বাজারভিত্তিক করার লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার জানিয়েছিলেন, শিগগিরই ব্যাংক ঋণের সুদহারের সীমা তুলে নিয়ে বাজারভিত্তিক করা হবে। ২০২০ সালের এপ্রিলের আগে ব্যাংক খাতে সুদহার ছিল ক্ষেত্রবিশেষে ২২ শতাংশ পর্যন্ত।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শে স্মার্ট হারের সমাপ্তি ঘটেছে। আইএমএফ বাজারভিত্তিক সুদহার নির্ধারণের প্রস্তাব করেছিল। সুদহার নির্ধারণের ফর্মুলা এমন সময়ে স্থগিত করা হলো, যখন আইএমএফের একটি মিশন ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ কর্মসূচির অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করতে ঢাকায় অবস্থান করছে।দীর্ঘদিন ঋণের সুদহার ৬-৯ শতাংশে আটকে রাখে বাংলাদেশ ব্যাংক। দাতা সংস্থা আইএমএফের চাপে গত বছর এ ব্যবস্থা বাতিল করে স্মার্ট পদ্ধতি চালু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সরকারি ট্রেজারি বিলের সুদের সঙ্গে মিলিয়ে এই পদ্ধতিতে ব্যাংক ঋণের সুদহার নির্ধারণের ফর্মুলা বের করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ব্যাংকসমূহ ঋণের খাতভিত্তিক সুদের হার ঘোষণা করবে এবং তুলনামূলক ঝুঁকি বিবেচনায় গ্রাহকভেদে ঘোষিত হার অপেক্ষা ১ শতাংশ কম বা বেশি হারে ঋণ প্রদান করতে পারবে।ঋণের মঞ্জুরিপরে উক্ত ঋণের সুদহার অপরিবর্তনশীল বা পরিবর্তনশীল তা উল্লেখ থাকতে হবে। কোনো ঋণের সুদহার পরিবর্তনশীল হলে তা বছরে সর্বোচ্চ কত বার বৃদ্ধি করা হবে এবং উক্ত বৃদ্ধি কত শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে, তা আবশ্যিকভাবে মঞ্জুরিপরে উল্লেখ থাকতে হবে।
কোনো ঋণ অথবা ঋণের কিস্তি সম্পূর্ণ বা আংশিক মেয়াদোত্তীর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হলে যে সময়ের জন্য মেয়াদোত্তীর্ণ হবে, উক্ত সময়ে চলমান ঋণ/তলবি ঋণের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ঋণ স্থিতির ওপর এবং মেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে মেয়াদোত্তীর্ণ কিস্তির ওপর সর্বোচ্চ ১.৫ শতাংশ দণ্ড সুদ আরোপ করা যাবে। ব্যাংক কর্তৃক ঘোষিত সুদহারের অতিরিক্ত কোনো সার্ভিস চার্জ আরোপ বা আদায় করা যাবে না।