নিজস্ব প্রতিবেদক:
পুলিশ কনস্টেবল হত্যা মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও বিএনপির মিডিয়া সেলের আহŸায়ক জহির উদ্দিন স্বপন এবং পিস্তল ছিনতাই মামলায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্সের জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বুধবার (৬ ডিসেম্বর) ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফয়সাল আতিক বিন কাদের শুনানি শেষে তাদের জামিন নামঞ্জুর করেন।
এর আগে তাদের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ জামিন আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন। আসামি পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ, শেখ শাকিল আহম্মেদ রিপন, আকরম ও জাকির হোসেন জুয়েল। রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল।
বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ (৩২) নিহতের ঘটনায় করা মামলায় গ্রেফতারের পর গত ৩ নভেম্বর আমীর খসরু ও স্বপনকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্তের স্বার্থে তাদের ১০ দিনের রিমান্ডে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ডিবির পুলিশ পরিদর্শক মো. তরীকুল ইসলাম। শুনানি শেষে আদালত তাদের ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে গত ১০ নভেম্বর তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ ছিল। মহাসমাবেশ ঘিরে সকাল থেকেই নয়াপল্টন ও এর আশপাশের এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের ঢল নামে। দুপুরে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হলে এক পর্যায়ে মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়।
সংঘর্ষ চলাকালে ফকিরাপুলের বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় মাথায় আঘাত পেয়ে রাস্তায় পড়ে যান দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য আমিরুল। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আমিরুলের বাড়ি মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলায়।
এ ঘটনায় গত ২৯ অক্টোবর রাজধানীর পল্টন মডেল থানায় পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুক মিয়া বাদী হয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় বিএনপির শীর্ষ নেতাসহ ১৬৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে পিস্তল ছিনতাই ও পুলিশের মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর ভাঙচুরের অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানার মামলায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স কারাগারে আটক রয়েছে। এর আগে গত ৫ নভেম্বর আদালত তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে গত ৮ নভেম্বর আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ২৮ অক্টোবর আসামিরা পুলিশ ক্যান্টিনে ভাঙচুর করে এবং পুলিশের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ইটপাটকেল মেরে জাদুঘরের কাচ ভেঙে ক্ষতি সাধন করে। মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। চানমারী পুলিশ লাইন্সের ডিউটি পোস্টে অগ্নিসংযোগসহ ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে কয়েকজন পুলিশ আহত হন। এছাড়া মারধর করে পিস্তল ও আট রাউন্ড গুলি ভর্তি ম্যাগাজিন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় গত ১ নভেম্বর খিলক্ষেত থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে পল্টন থানায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ ৪১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। মামলায় ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ ৩০০/৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।