বিএসএমএমইউয়ে ১৬ হাজার কার্ডিয়াক ইন্টারভেনশন সম্পন্ন হয়েছে

প্রকাশিত: ৬:৩৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৪, ২০২৪

সাজ্জাদ হোসেন:

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) এখন পর্যন্ত প্রায় ১৬ হাজারের মতো কার্ডিয়াক ইন্টারভেনশন সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে হৃদরোগের অনেক বেশি ইন্টারভেনশন হচ্ছে। আমাদের এখানে ১৬০০ পিসিআই সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে।

রোববার (১৪ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের এ-ব্লক অডিটোরিয়ামে ‘ক্যাথ ল্যাব রিলেটেড ইন্টারভেনশন’ শীর্ষক মাসিক সেন্ট্রাল সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।

উপাচার্য বলেন, স্ট্রোকের চিকিৎসায় আমরা এরইমধ্যে সফলতা পেয়েছি। স্ট্রোকের রোগীকে তিন থেকে চার ঘণ্টার মধ্যে আমাদের এখানে আনলে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়। এর প্রমাণ এরইমধ্যে আমরা পেয়েছি। আমাদের এখানে ডিএসএ, নিউরোলজিক্যাল ইন্টারভেনশন হয়।

তিনি বলেন, আমি যোগ দেওয়ার আগে শিশু হৃদরোগ বিভাগে বছরে ১০০টি অপারেশন হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে বছরে শিশুদের জটিল হৃদরোগ নিরাময়ের জন্য ৩৩০টির বেশি অপারেশন হচ্ছে। শিশু হৃদরোগের ইন্টারভেনশনে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সহায়তা ছাড়া যাতে আমাদের চিকিৎসকেরা নিজেরাই করতে পারে সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।

শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, হৃদরোগের জটিল ও কঠিন চিকিৎসাসেবা চিকিৎসায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক সফলতা রয়েছে। এখন আর হৃদরোগের চিকিৎসার জন্য রোগীদের দেশের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।

উপচার্য আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন অনেক বিভাগ আছে যে অন্য বিভাগে কী কাজ হয় তা জানে না। এই সেন্ট্রাল সেমিনারের মাধ্যমে আমাদের একটি সুযোগ হয় এক বিভাগের কাজ অন্য বিভাগকে জানানো। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে হেপাটোলজি বিভাগে লিভার সিরোসিস, লিভার ফেইলরের, লিভার ক্যান্সারে ইন্টারভেনশন হয়। হেপাটোলজি বিভাগে ন্যাসভ্যাকের মতো ওষুধের ট্রায়ালও হয়।

সেমিনারে বলা হয়, কার্ডিওলজি বিভাগে সব ধরনের করোনারি ইন্টারভেনশনসহ ডিভাইস ইমপ্ল্যান্টেশন এবং স্ট্রাকচারাল হার্ট ডিজিজের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়ে থাকে। এর মধ্যে প্রাইমারি পিসিআই- এর মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ জরুরি জীবন রক্ষাকারী ইন্টারভেনশনও রয়েছে। এই বিভাগেই যুগান্তকারী হাইব্রিড পেরিফেরাল ভাসকুলার ইন্টারভেনশন যেমন হয়েছে, তেমনি একই সাথে দুটি ভিন্ন ভিন্ন অঙ্গে (হার্ট ও পেরিফেরাল ভেসেল-এ) স্টেম সেল থেরাপি দেওয়া হয়েছে যা বিশ্বে প্রথম ঘটনা। এ দুটো কীর্তিই রচিত হয়েছে সহযোগী অধ্যাপক ও ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ডা. মো. রসুল আমিন, সহযোগী অধ্যাপক ও ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ডা. মোহাম্মাদ ফয়সাল ইবনে কবির ও সহযোগী অধ্যাপক ও ভাসকুলার সার্জন ডা. রকিবুল হাসানের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়। ২০২৩ সালে প্রায় পাঁচ হাজারের মতো ইন্টারভেনশন হয়েছে এই বিভাগে। কিছু যন্ত্রপাতির স্বল্পতা থাকা সত্ত্বেও এই বিভাগ দ্রুত সামনে এগিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর।

সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু হৃদরোগ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. তারিকুল ইসলাম, হেপাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহাতাব স্বপ্নীল, নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ্ সবুজ, হৃদরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফয়সাল ইবনে কবির একটি করে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সেন্ট্রাল সাব কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. বেলায়েত হোসেন সিদ্দিকী। সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন মানসিক রোগ বিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ফাতিমা জোহুরা। সেমিনারে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, বিভিন্ন স্তরের শিক্ষক, কনসালটেন্ট, চিকিৎসক ও রেসিডেন্টরা উপস্থিত ছিলেন। সেমিনার শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল সাব কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. বেলায়েত হোসেন সিদ্দিককে অবসরে যাওয়ার প্রাক্কালে বিদায়ী সংবর্ধনাও দেওয়া হয়।