জেলা প্রতিনিধি,পঞ্চগড়ঃ
পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়নের খয়খাটপাড়া সীমান্তে বুধবার (৮ মে) দুপুরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়েছে। সেখানে বিজিবির পক্ষে পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল যুবায়েদ হাসান ও বিএসএফের পক্ষে ১৭৬ বিএন বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট এস এস শিরোহী নেতৃত্ব দেন।
পতাকা বৈঠকে বিএসএফের গুলিতে দুই যুবক নিহত হওয়ার ঘটনায় কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজিবি। আর এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে বিএসএফ। এ সময় বিএসএফ জানিয়েছে, চোরাকারবারিরা বিএসএফকে আক্রমণ করলে বিএসএফ টহলদল জীবন রক্ষার্থে গুলি করতে বাধ্য হন। নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিহত বাংলাদেশি যুবকদের লাশ বিজিবির কাছে হস্তান্তর করা হবে।
খয়খাটপাড়া সীমান্তে আধা ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে এসব করা হয়েছে বলে কথা নিশ্চিত করেছেন পঞ্চগড়ের ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল যুবায়েদ হাসান।মঙ্গলবার গভীর রাতে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার খয়খাটপাড়া সীমান্তে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুই বাংলাদেশি যুবক নিহত হন। তারা হলেন- তেঁতুলিয়া উপজেলা তিরনইহাট ইউনিয়নের ব্রমত্তোর গ্রামের কেতাব আলীর ছেলে ইয়াসিন আলী (২৩) ও তেঁতুলিয়া উপজেলা সদর ইউনিয়নের মাগুড়া গ্রামের মজনু মিঞার ছেলে আব্দুল জলিল।
স্থানীয়রা, পুলিশ ও বিজিবি সূত্র জানিয়েছে, বুধবার সকালে তেঁতুলিয়া উপজেলার রনচন্ডি বিওপি আওতাধীন ৪৪৬/১৪ পিলার সংলগ্ন খয়খাটাপাড়ায় সীমান্তে ভারতের ফকিরপাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের টহলরত বিএসএফ সদস্যরা কাঁটাতার সংলগ্ন ভারতের দরগাসিং এলাকায় বাংলাদেশি যুবকদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে দুই বাংলাদেশি যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পরে বিএসএফ সদস্যরা তাদের ভারত অভ্যন্তরে নিয়ে যায়।
নিহত ইয়াসিন আলীর মা জবেদা বেগম বলেন, বুধবার সকালে ভারতীয় এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পাই, আমার ছেলেকে বিএসএফ গুলি করে মেরেছে। যারা আমার ছেলেকে ডেকে সীমান্ত এলাকায় নিয়ে গেছে তাদের বিচার চাই। আমার ছেলে একমাস আগে বিয়ে করেছে। আমাদের সব আশা ভরসা শেষ হয়ে গেলো। দ্রুত ছেলের লাশটা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করেছেন তিনি।
পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল যুবায়েদ হাসান বলেন, পতাকা বৈঠকে সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছি। আমরা বলেছি, সীমান্তে মানুষ হত্যা করে দুই দেশের বন্ধুত্ব রক্ষা করা যায় না। তাদের গ্রেফতার করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া যেত। এ ছাড়া ফাঁকা গুলি কিংবা পায়ে গুলি করা যেত। কিন্তু তারা তা করেনি। তারা জানিয়েছে, আত্মরক্ষার্থে তারা গুলি করতে বাধ্য হয়েছে। ওই যুবকরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাদের উপর আক্রমণ করেছিল। তারা প্রতিহত করতেই গুলি ছুড়েছে বলে জানিয়েছেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তারা লাশ ফিরিয়ে দেবে।