বিমানবন্দরে টানাপার্টি: বিদেশফেরত যাত্রীদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে সর্বস্ব লুটে নিতো ওরা 

প্রকাশিত: ১:০৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৫, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সম্প্রতি একটি ফ্লাইটযোগে বিদেশ থেকে বাংলাদেশে আসেন দুই প্রবাসী। তারা নামেন ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। দেশে এসেই প্রতারকের খপ্পরে পড়ে যান তারা। বিমানবন্দরে অবতরণের পর সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে তারা যখন নিজ গন্তব্যে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বিমানবন্দরের পার্কিং এরিয়ায় গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন, ঠিক তখন তাদের সঙ্গে যাত্রীবেশী দুই প্রতারকের দেখা হয়। কথায় কথায় তারা প্রবাসীদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। এরপরই সুযোগ বুঝে সর্বস্ব লুট করে সরে পড়েন তারা। বিমানবন্দর কেন্দ্রিক মলম-অজ্ঞান ও টানাপার্টির সেই  চক্রের মূলহোতাসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল শুক্রবার (১৪ জুলাই) তাদের গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- বারেক সরকার (৪২)। তিনি বিমানবন্দর কেন্দ্রিক গড়ে ওঠা একটি অজ্ঞানপার্টির নেতা। অন্যজন আমির হোসেন (৫০)। তিনি একজন পেশাদার ডাকাত ও অজ্ঞানপার্টির সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে দেশেরড বিভিন্ন থানায় চুরি, দস্যুতা এবং ডাকাতির অভিযোগে মামলা রয়েছে। আজ শনিবার (১৫ জুলাই) সকালে নিউজ পোস্ট বিডিকে এসব তথ্য জানিয়েছেন বিমানবন্দরে পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক।

তিনি বলেন, গত ৮ ও ১১ জুলাই বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন দুই যাত্রীকে অজ্ঞান করে সর্বস্ব লুটে নেওয়ার দুটি অভিযোগ পায়। ভুক্তভোগীরা সুস্থ হওয়ার পর জানান, বিমানবন্দরে অবতরণের পর সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে তারা যখন নিজ গন্তব্যে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ক্যানোপিতে বা পার্কিং এরিয়ায় গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন, তখন তাদের সঙ্গে যাত্রীবেশী বারেক ও আমিরের পরিচয় হয়। কথায় কথায় তারা ভুক্তভোগীর বিশ্বাস অর্জন করে নেন এবং সখ্য গড়ে তোলেন। এরপর কৌশলে যাত্রীর গন্তব্য জেনে নিয়ে নিজেও একই গন্তব্যে যাবেন বলে একসঙ্গে শেয়ারে গাড়ি ভাড়া করে বা বাসে ভ্রমণের প্রস্তাব দেন। পরে সুযোগ বুঝে যাত্রীকে চেতনানাশক মিশ্রিত খাবার খাইয়ে অজ্ঞান করে সর্বস্ব লুট করে সরে পড়েন অপরাধীরা। পরে এপিবিএন বিষয়গুলো তদন্ত করে জানিয়ে জিয়াউল হক বলেন, ঘটনার মূল অপরাধী বারেক ও আমিরকে শনাক্ত করা হয়। এপিবিএনের কাছে অভিযোগ করা ভুক্তভোগী নেহারুলের অভিযোগের সঙ্গে অজ্ঞানপার্টির নেতা বারেকের সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়া আরেক প্রবাসী ইসমাইল হোসেনের অভিযোগের মূল অভিযুক্তও বারেক ও আমির।

তিনি জানান, অভিযুক্ত বারেকের নামে যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, খিলগাঁওসহ বিভিন্ন থানায় বেশ কিছু চুরি ও ডাকাতির মামলা রয়েছে। বারেক শরীয়তপুরের বাসিন্দা, আর আমির বরিশালের বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানা, উত্তরা পশ্চিম থানা, ওয়ারী থানা এবং নাটোর সদর থানায় ডাকাতি ও চুরির অভিযোগে মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় আইনানুর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক।