বিয়ানীবাজারে প্রেমিকের হাতে প্রেমিকার বাবা খুন, ঘাতকের স্বীকারোক্তি
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
বিয়ানীবাজারের লাউতায় নির্মাণ শ্রমিক নজরুল হত্যাকাণ্ডের ঘটনার স্বীকারোক্তি দিয়েছে ঘাতক আব্দুল মুবিন লিমন। সোমবার বেলা ২টায় বিয়ানীবাজার থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে বিয়ানীবাজারে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বিয়ানীবাজার-জকিগঞ্জ (সার্কেল) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়, বিয়ানীবাজার থানার (ওসি) অবনী শংকর কর ও পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জাহিদুল হক উপস্থিত ছিলেন।
বিয়ানীবাজার-জকিগঞ্জ (সার্কেল) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় জানান, ঘাতক তাদের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়ে বলেছে “নির্মাণ শ্রমিক নজরুল ইসলামের মেয়ের সাথে পাশের গ্রামের আব্দুল মুবিন লিমনের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ঘটনাটি জেনে যান মেয়ের বাবা নজরুল ইসলাম। মেয়ের সাথে লিমনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এ ঘটনার প্রায় দুই মাস প্রেমিকার সাথে যোগযাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় লিমন রাগে ক্ষোভে মোবাইল ফোনে কাজের কথা বলে বাইরে ডেকে নেন নজরুল ইসলামকে। পরে গ্রামের রাস্তার একটি নির্জন স্থানে নিয়ে প্রথমে কাঠের একটি লাঠি দিয়ে নজরুল ইসলামের মাথায় আঘাত করে লিমন। পরে একটি ধারালো ছুরি দিয়ে নজরুল ইসলামের গলা কেটে তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে ফেলে যায়”।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের এ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, এ হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। নজরুল ইসলামকে নৃশংসভাবে হত্যায় প্রেমঘটিত বিষয়ের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ।
বিয়ানীবাজার-জকিগঞ্জ সার্কেল সুদীপ্ত রায় সাংবাদিকদের আরও জানান, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টায় উপজেলার লাউতা ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সামনে থেকে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে একই ইউনিয়নের টিকরপাড়া গ্রামের মুহিব উদ্দিনের ছেলে আব্দুল মুবিন লিমনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে এবং তার দেয়া স্বীকারোক্তিতে তার বসতঘর থেকে একটি দেশীয় অস্ত্র ছুরি, কাঠের লাঠি ও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ জানায়, এ হত্যাকাণ্ডের সাথে আর কেউ জড়িত রয়েছে কি না তা তদন্ত করে দেখবে পুলিশ। তবে এখন পর্যন্ত আব্দুল মুবিন লিমন একাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার লাউতা ইউনিয়নের নন্দীরফল গ্রামের একটি নির্জন স্থান থেকে নির্মাণ শ্রমিক নজরুল ইসলামের (৪৫) গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে এ ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী হাছনা বেগম বাদী হয়ে ২৯ ডিসেম্বর বিয়ানীবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।