বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যায় সাবেক মেয়র মুক্তির জামিন হাইকোর্টে বাতিল

প্রকাশিত: ৭:১০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৬, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার আসামি টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তির জামিন বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তার আইনজীবীকে সতর্ক করেছেন আদালত। এর আগে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন আইনজীবী। পাশাপাশি তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ রোববার (২৬ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রিকল করে এই আদেশ দেন। আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সোরোয়ার হোসেন বাপ্পী। আজ রোববার বিকেলে নিউজ পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সোরোয়ার হোসেন বাপ্পী।
তিনি বলেন, যদি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আত্মসমর্পণ না করেন তাহলে তাকে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ অর্থাৎ গ্রেফতার করতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত বুধবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইল কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে শহরের কলেজপাড়ার বাসায় ফেরেন তিনি। ওইদিন টাঙ্গাইলের জেল সুপার মোখলেসুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, উচ্চ আদালতের জামিন সংক্রান্ত কাগজপত্র কারাগারে পৌঁছালে সব নিয়ম মেনে দুপুরে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
এর আগে তথ্য গোপন করে গত সোমবার (২০ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত একই বেঞ্চ থেকে সহিদুর রহমান খান মুক্তির জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। সাবেক মেয়র মুক্তির আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আব্দুল মুনতাকিম জানান, বিচারকদ্বয় টাঙ্গাইলের ফারুক হত্যা মামলায় সাবেক মেয়র মুক্তির ছয় মাসের অন্তর্র্বতীকালীন জামিন মঞ্জুর করেছেন। সহিদুর রহমান খান মুক্তি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খানের ছেলে। তার ভাই আমানুর রহমান খান ওরফে রানা ওই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।
২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমদের গুলিবিদ্ধ মরদেহ তার কলেজপাড়া বাসার কাছ থেকে উদ্ধার হয়। এ ঘটনার তিনদিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। পরে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ২০১৪ সালের আগস্ট আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ আলী নামের দুজনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তাদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে তৎকালীন টাঙ্গাইল-৩ আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা ও বাস কোচ মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব জাহিদুর রহমান খান কাকন ও ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। এরপর তারা আত্মগোপনে চলে যান। পরে সহিদুর রহমানকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
২০১৬ সালের ফেব্র“য়ারি আমানুর রহমান খান রানা ও অপর তিন ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা। মামলাটি বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।